রাজগঞ্জের খেজুরের গুড় যাচ্ছে বিদেশে

0

 

ওসমান গণি, রাজগঞ্জ (যশোর)॥ যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জসহ ৬টি ইউনিয়নের খেজুরের রসের তৈরি গুড়-পাটালি এখন দেশের চাহিদা মিটিয়ি বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। যে কারণে গোটা মণিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন্ হাট-বাজারে চলতি মৌসুমে গুড়-পাটালির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া বাজারে নতুন গুড়-পাটালির দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা অনেকটা হতাশ হলেও গাছিরা রয়েছেন মহাআনন্দে। পাশাপাশি এ অঞ্চলের গাছিরা গুড় ও পাটালির দাম বেশি পাওয়ায় যেমন খুশিতে রয়েছেন তেমনি প্রতিনিয়ত এলাকার ইট ভাটাগুলোতে খেজুর গাছ পোড়ানো দেখে হতাশ হওয়ায় পাশাপাশি তারা অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
সরজমিনে দেখা যায়, চলতি শীত মৌসুমে গাছিরা শীতকে উপেক্ষা করে ভোর রাতে বের হচ্ছেন খেজুরের রস সংগ্রহ করতে। রাজগঞ্জসহ রোহিতা, খেদাপাড়া, হরিহরনগর, ঝাঁপা, মশ্মিমনগর ও চালুয়াহাটি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামেই এখন চলছে খেজুরের রস সংগ্রহের কাজ। সংগ্রহকৃত সেই রস দিয়ে বাড়িতে বাড়িতে চলছে গুড় ও পাটালি বানানোর ব্যবস্থাও। গুড়-পাটালি তৈরির পর ক্রেতারা বাড়ি থেকে কমদামে কিনে নিয়ে বিভিন্ন হাট-বাজারে চড়াদামে বিক্রি করছে । গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য সেই খেজুরের রসের তৈরি এ গুড় বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬কেজি ওজনের প্রতি ভাড় ১৪০০ থেকে ১৬০০ এবং ১০ থেকে ১২ কেজি ওজনের প্রতি ভাড় তরল গুড় বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ থেকে ২৬০০টাকা। এছাড়া পাটালি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০থেকে ৪০০টাকা দরে। যা গত বছরের চেয়ে ভাড় প্রতি ৫শ টাকা বেশি বলে দাবি করেছেন ক্রেতারা। রাজগঞ্জ অঞ্চলের উৎপাদিত গুড়ের পাটালির স্বাদ সারাদেশের মানুষের কাছে যেমন প্রিয় তেমনি তা মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, দুবাই, কাতার, ওমান ও কুয়েতবাসীসহ মধ্যপ্রাচ্য বসবাসকারি প্রবাসীদের কাছে অত্যান্ত প্রিয় জিনিষ হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।  রাজগঞ্জ এলাকার গাছি আজগার আলী জানান, চলতি শীত মৌসুমে বাজারে কাঁচা রস ও গুড়পাটালির ভালো দাম পাওয়ায় বেশ খুশিই লাগছে। তবে বাজারে এ দাম অব্যাহত থাকলে আগামী শীত মৌসুমে আরো বেশি খেজুরগাছ গাছ থেকে কাঁচা রস সংগ্রহ করা হবে।  রাজগঞ্জ বাজারের গুড় ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম দৈনিক লোকসমাজকে জানান, দেশের তৈরি উন্নত মানের গুড় ও পাটালি সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তা সরবরাহ করেন। তাদের সরবরাহকৃত গুড় ও পাটালি ঢাকা ও ভোলা জেলার কয়েকজন ব্যবসায়ী বৈধ পথে মধ্যপ্রাচ্য’র বিভিন্ন দেশে রফতানি করছেন।  ঢাকার দোহারের গুড় ও পাটালি ব্যবসায়ী মিলন হোসেন জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছে। তাদের চাহিদা মেটাতেই আমারা দেশের তৈরি গুড় ও পাটালি মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি করছি।