সিন্ডিকেটের কবলে কয়লা কাঠে ঝুঁকছে ইট ভাটা

0

নজরুল ইসলাম মল্লিক, অভয়নগর (যশোর)॥ অভয়নগরে নওয়াপাড়া নদী বন্দরে সিন্ডিকেটের কবলে কয়লার দর । দফায় দফায় কয়লার মূল্য বাড়ায় ক্ষতির আশংকায় ইট ভাটার মালিকরা উৎপাদন বন্ধ রেখেছেন অথবা কাঠে ঝুঁকছেন। একাধিক সূত্রে জানা যায়, নওয়াপাড়া বন্দর থেকে প্রায় ২৭ টি জেলার ইটভাটায় কয়লা যায়। তবে চলতি মৌসুমে প্রায় সকল ইটভাটা বন্ধ রয়েছে। গত বছর কয়লার বাজার দর ছিল প্রতি টন ১৫ হাজার টাকা। পরে বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ওই কয়লা ১৮ থেকে ১৯ হাজার টাকা টনে। চলতি বছরের অক্টোবর মাস থেকে এ দরকে ছাড়িয়ে বর্তমানে ইন্দনেশিয়ার সুপার কয়লা ২২ হাজার থেকে ২৯ হাজার টাকা প্রতি টন বিক্রি হচ্ছে। কয়লার বাজারে অস্থিরতার কারণে ইট উৎপাদনে যাচ্ছেন না অনেক ইট ভাটা মালিক। এছাড়া কয়লার মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে ইটের ওপর। সব ধরনের ইটে প্রতি হাজারে ২ থেকে ৪ হাজার টাকা মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে স্থানীয় আবাসন খাতসহ উন্নয়ন প্রকল্প কাজের ঠিকাদাররাও বিপাকে পড়েছেন। ভাটা মালিকদের অভিযোগ, কয়লার বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে দফায় দফায় দাম বাড়ানো হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়া, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আমদানি করা কয়লার দাম সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হচ্ছে। তাই বিনিয়োগ ঝুঁকির আশংকায় ইট উৎপাদনের যাচ্ছেন না তারা। ইট প্রস্তুতকারক সমিতির যশোর জেলা শাখার সহ সভাপতি সিটি টু ব্রিকসের মালিক নাজির উদ্দিন বলেন, কয়লার মূল্য বৃদ্ধির কারণে এবার ভাটাতে ইট উৎপাদন করতে পারছি না। তবে বেঁচে থাকার তাগিদে লোকসান হলেও অল্প কয়লা কিনে একটি ভাটায় আগুন দিয়েছি। এতে ইটভাটা মালিকসহ সকলেই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কথা চলছে। সবুজ সংকেত পেলেই উৎপাদনে যাবেন ভাটা মালিকরা। ভাটার মালিক নুর ইসলাম বলেন, কয়লার বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে দফায় দফায় দাম বাড়ানো হচ্ছে । কয়লার দাম গতবারের তুলনায় এবার দ্বিগুণ। কাঠ দিয়ে ইট পোড়াতে হবে। তা না হলে লোকসান কাটাতে পারবো না।
কয়লা আমদানিকারক সরকার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাইদ সরকার বলেন, যদি আমাদের কাছ থেকে কয়লা নেন। দাম পড়বে প্রতি টন ২৯ হাজার টাকা। তাছাড়া আমাদের সব ডিও (কয়লা) ক্ষুদ্র পার্টির কাছে বিক্রি করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে কম দরে কিনতে পারেন। নওয়াপাড়া সার, সিমেন্ট, খাদ্য শস্য ও কয়লা আমদানিকারক ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি শাহ জালাল হোসেন বলেন, সারাদেশে ৩০ লাখ টন কয়লা আমদানি করা হয়ে থাকে। নওয়াপাড়া বন্দরে ১৭ লাখ টন কয়লা আমদানি করে ২৭ টি জেলায় বিক্রি করা হয়। এবার এলসি তেমন না হওয়ায় বিপাকে পড়েন আমদানিকারকেরা। বর্তমানে ৬ থেকে ৭ লাখ টন কয়লা আমদানি করেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে ২২ হাজার টাকার কয়লা প্রতিটন ২৯ হাজার বিক্রয় করা হচ্ছে। যে কারণে ইট মালিকেরা বিপাকে আছেন।