পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় ২২ বছর বয়সী এক কুর্দি তরুণীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানে গত ৮ দিন ধরে চলমান বিক্ষোভ প্রতিবাদ দেশটিকে ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।
ওই তরুণীকে সঠিকভাবে হিজাব না পরার অভিযোগে গ্রেফতার করেছিলো পুলিশ। ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরানে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন মাশা আমিনি। গ্রেফতার করে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ৩ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাশার। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তার মৃত্যু হয়েছে স্বাস্থ্যগত কারণে।
যদিও ওই তরুণীর পরিবার ও বহু ইরানি নাগরিকের বিশ্বাস যে হেফাজতে মারাত্মক মারধরের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন তারা যদি এখনই এর বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ান তাহলে একদিন তাদেরও একই ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে। প্রতিবাদ বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এ ঘটনাটি এমন সময় ঘটেছে যখন ইরানের মানুষ এমনিতেই ক্ষুব্ধ। দেশটির অভিজাত ইসলামি রাজনীতিবিদদের দুর্নীতি, ৫০ শতাংশের বেশি মুদ্রাস্ফীতির কারণে দারিদ্র বেড়ে যাওয়া, পারমাণবিক আলোচনায় অচলাবস্থা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার অভাব তরুণদেরসহ একটি বিরাট জনগোষ্ঠীকে হতাশ করে তুলেছে।
ইরানের সোশ্যাল সিকিউরিটি অর্গানাইজেশন রিসার্চ ইন্সটিটিউটের মতে দেশটির অন্তত আড়াই কোটি মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে এবং ক্রমশ এই সংখ্যা বাড়ছে।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে এটাই বিক্ষোভের নতুন কোন ঘটনা নয়। কিন্তু অনেক পর্যবেক্ষকের মতে আগের যে কোন ঘটনার তুলনায় এবারেরটায় ভিন্নতা আছে।
সব কিছুর বাইরে- ইসলামি বিপ্লবের পর এটা নারীদের সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ।