রাজগঞ্জ হাটে পশু বিক্রি কম হতাশ খামারি ও ব্যবসায়ীরা

0

 

ওসমান গণি. রাজগঞ্জ (যশোর) সংবাদদাতা ॥ কুরবানি ঈদের আর মাত্র বাকি দুই দিন। এই ঈদকে সামনে রেখে হয়াতপুর গ্রামের ফিরোজ হোসেন দুই বছর ধরে দেশি জাতের একটি ষাঁড় লালন-পালন করে বেশ বড় করেছেন। আশা করেছিলেন ষাঁড়টি হাটে বিক্রি করে কিছু লাভের মুখ দেখবেন। কিন্তুু পশুর হাটে নেয়ার পর ষাঁড়টির দাম শুনে বেশ হতাশ হন তিনি। ৮মণ ওজনের এ ষাঁড়টি তিনি বিক্রি না করে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। আজ বৃহস্পতিবার রাজগঞ্জের হাটে তুলবেন বলে জানান এ ব্যবসায়ী।
বুধবার কথা হয়, মণিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের হয়াতপুর গ্রামের গরু বিক্রেতা ফিরোজ হোসেনের সাথে। তিনি জানান, ২০২০ সালের করোনাকালীন গরুটি স্থানীয় একটি হাট থেকে ৯৫হাজার টাকায় ক্রয় করেন। এরপর দীর্ঘ দুই বছর গরুটি লালন-পালন করে বেশ বড় করেছেন তিনি। গত সোমবার বাণিজ্যিক শহর রাজগঞ্জ পশুর হাট ও মঙ্গলবার মণিরামপুর পশুর হাটে বহু আশা নিয়ে গরুটি নিয়ে যান এ ব্যবসায়ী। দেশীয় জাতের এ গরুটি কমপক্ষে শতাধিক ক্রেতা দেখলেও দাম শুনে বেশ হতাশ হন ব্যবসায়ী ফিরোজ হোসেন।
উপজেলার বৃহত্তর বাণিজ্যিক শহর রাজগঞ্জ বাজার। সোমবার এ বাণিজ্যিক শহরের পশুর হাটে ঈদুল আজহা উপলক্ষে পার্যাপ্ত সংখ্যক গরু-ছাগল উঠলেও হাটে ক্রেতা একেবারেই কম। উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র পশুর এ হাটে দেশি ও বিদেশি জাতের সকল প্রকারের গরু এবং ছাগল পাওয়া যায়। সম্প্রতি বৃহত্তর এই পশুর হাটে কেনাবেচা একদম কম হওয়ায় ব্যবসায়ীসহ খামারিরা হাট থেকে গরু-ছাগল ফেরত নিয়ে যাচ্ছে। হাটে বেশির ভাগই ক্রেতা গরু-ছাগল দেখছেন দরদামও করছেন কিন্তুু কিনছেন কম।
ফলে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেয়া সাধারণ গরু ব্যবসায়ীসহ এলাকার খামারি মালিকরা। ক্রেতারা গরুর দাম বেশির অভিযোগ করলেও বিক্রেতারা তা একেবারেই মানতে নারাজ। তারা বলছে সম্প্রতি পশু খাদ্যের দাম দ্বিগুন হলেও গরুর দাম সেভাবে বাড়েনি। তবে বেচাকেনা কম হলেও বৃহত্তর এ হাটে লোক সমাগম বেশ চোখে পড়ার মতো। ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের রাজগঞ্জের বৃহত্তর এ পশুর হাটটি।
কথা হয়, খামারি মালিক মোবারকপুর গ্রামের রেজাউল ইসলাম ও মনোহরপুর গ্রামের আব্দুস সালামসহ অনেকের সাথে তারা জানান, তাদের গরু হাটে নিয়ে বিক্রি করতে না পারায় হতাশ হয়ে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে কথা হয় স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী মোবারকপুর গ্রামের আব্বাস আলী, চন্ডিপুর গ্রামের মিলন হোসেন, নজরুল, মনিরুজ্জামান বলেন, গ্রাম থেকে গরু কিনে হাটে নিয়ে বিক্রি করতে না পেরে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
সোমবার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের মোবারকপুর পালপাড়ার এ পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, দেশীয় ও ফ্রিজিয়ান জাতের বিভিন্ন আকারের পর্যাপ্ত পরিমাণে গরু ও ছাগল রয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে ট্রাক, ভটভটি ও পাওয়ার ট্রলিতে করে শ শ গরু ও ছাগল আসছে এ হাটে। বিশাল এ হাটের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত জুড়ে শুধুই গরু আর গরু। ক্রেতারা তাদের পছন্দের গরু দেখছেন এবং দরদাম ও করছেন। তবে পাইকাররা গরুর আকার অনুসারে দাম অনেকটা বেশি চাচ্ছেন বলে অভিযোগ কয়েকজন ক্রেতার। ক্রেতা-বিক্রেতাদের দরকষাকষি ও কেনাবেচায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে রাজগঞ্জ অঞ্চলের একমাত্র পশু হাটের পরিবেশ। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বৃহত্তর এ পশুর হাটটি বসবে বলে জানান হাটের ইজারাদার ইমরান খাঁন পান্না।