নিন্দুকদের মুখ বন্ধ হোক

0

ডিজিটাল যুগে বিদ্যুৎ ছাড়া জীবনযাত্রা কল্পনাই করা যায় না। লাইট, ফ্যান, এসি, ফ্রিজ, ভ্যাকুয়াম ক্লিনার, রাইচ কুকার, ওয়াশিং মেশিনসহ যাবতীয় ঘর-গৃহস্থালির কাজে বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। কুটির শিল্প থেকে ভারী শিল্প সর্বত্রই বিদ্যুৎ অপরিহার্য। যানবাহন চালাতেও এখন বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ছে। সর্বাধিক প্রয়োজন হচ্ছে সেচ ব্যবস্থায়। বিদ্যুতের অভাবে বোরোধানসহ সব ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এরই মাঝে সরকারের মেগা প্রকল্পে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে এবং তা ক্রমেই বাড়তে থাকবে।
এটি অনস্বীকার্য যে উন্নয়ন অনেকাংশেই নির্ভর করে বিদ্যুতের সহজভ্যতার ওপর। এক্ষেত্রে সরকারের দাবি অনুযায়ী বাংলাদেশের অগ্রগতি যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ছিল পাঁচ হাজার মেগাওয়াটেরও কম। সে সময় সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। দাবি অনুযায়ী ২০২১ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছড়িয়ে যায় এবং সক্ষমতা দাঁড়ায় ২৫ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াট। এবার তাতে যোগ হয়েছে আরও এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী পটুয়াখালীর পায়রায় নির্মিত দেশের বৃহত্তম তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির কার্যক্রম আনুষ্ঠাকিভাবে উদ্বোধন করেছেন। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশের শতভাগ মানুষকে আজ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা গেছে। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষ এবং স্বাধেীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের জন্য এ এক মাইলফলক অর্জন। দেশের জন্য স্বপ্ন পূরণের মত ঘোষণাটি জাতিকে আনন্দিত করে। আমরাও আনন্দিত হয়েছি। তাই সংবাদটি লোকসমাজসহ সকল পত্রিকায় প্রধান শিরোনাম হয়েছিল। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সে আনন্দ যেন ফিকে হয়ে যাচ্ছে।
গতকাল লোকসমাজের প্রধান শিরোনাম ছিল “লোডশেডিং : যশোরের গ্রামাঞ্চলে গরমে ভোগান্তি চরমে”। প্রতিবেদক আকরামুজ্জামান পল্লী বিুদ্যৎ কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপকালে তারা জানিয়েছেন দৈনিক গড়ে ৩০ থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সংকট থাকছে। ফলে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। এদিকে, এই লোডশেডিং যে রোজাদারদের তারাবীসহ প্রায় প্রতি ওয়াক্তে ভোগান্তি বাড়ছে। মাঠে সেচ কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চাষিরা বোরো ধান নিয়ে শঙ্কিত বোধ করছেন। সামনে ঈদ বাজার নিয়েও ব্যবসায়ীরা শঙ্কা প্রকাশ করছেন। তারা শতভাগ বিদ্যুৎ দাবি নিয়ে নানা মন্তব্য করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও সোচ্চার হচ্ছে। আমরা এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। আমরা শুধু চাইছি চব্বিশ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ হোক। যাতে নিন্দুকেরা শতভাগ বিদ্যুৎ ঘোষণা নিয়ে কোনো কটাক্ষ করতে না পারে। সবাই আলোর ছটাই সরকারের প্রশংসার পঞ্চমুখ হোক।