খোশ আমদেদ মাহে রমজান

0

টানা দু’বছর করোনার ধ্বংসলীলার পর এবার কিছুটা স্বস্তির মাঝে এসেছে মুসলিম জাহানের শ্রেষ্ঠ ইবাদত ও মুক্তির মাস পবিত্র মাহে রমজান। আমরা মুক্তির এই মাসকে জানাই খোশ আমদেদ। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তাবাহী। পৃথিবীর অগণিত মানুষের মুক্তি ও কল্যাণের বাণী বয়ে নিয়ে আসে এই পবিত্র মাস। মুসলমানদের দ্বীন-দুনিয়া আধ্যাত্মিক ও পার্থিব উন্নতি এবং গৌরব ও শ্রেষ্ঠত্বের অবিস্মরণীয় ফজিলতবাহী মাস এই রমজানুল মুবারক। তাই, এই মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। পরম করুণাময় আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের জন্য রমজানকে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জাহানের উন্নতির সোপান হিসেবে নির্ধারিত করেছেন। এ মাস সম্পর্কে মহান আল্লাহ নিজেই ঘোষণা করেছেন, “এই রমজান মাস বিশেষভাবে আমার জন্য এবং আমি নিজেই রোজাদার বান্দাদের পুরস্কৃত করবো”। ‘রমজান’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো দহনকারী বা মোচনকারী’। মানুষের সকল পাপ-পঙ্কিলতা আল্লাহ পাক রমজান মাস উপলক্ষে ক্ষমা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাই, এ মাসের সদ্ব্যবহার করে মানুষ তাদের সকল পাপমোচন করার সুযোগ গ্রহণ করে থাকে এবং তারা হয়ে ওঠে খাঁটি মুমিন। ফলে, আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টিলাভ হয়ে ওঠে সহজতর। আর এ মাসেই মানুষ আল্লাহ ও তার রসুল (স.) এর ভালোবাসা অর্জনের অধিকতর সুযোগ পেয়ে থাকে। আল্লাহ পাক রমজান মাসে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ও জ্ঞানবান মুসলমান নর-নারীর জন্য রোজা রাখা বাধ্যতামূলক করেছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদে ইরশাদ করেন- হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর ফরজ করা হয়েছিলো। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো। (সুরা-বাকারাহ-১৮৩)
পবিত্র মাহে রমজানের কল্যাণকর হাজারো নিদর্শন রয়েছে ইসলামের দিক নির্দেশনা দানকারী পবিত্র কুরআন মজিদ ও হাদিস শরীফে। বিশেষজ্ঞরা তা বিশ্লেষণ করে নানামুখি ধারণা দিয়ে থাকেন। সব কিছুতেই একটি বিষয় স্পষ্ট থাকে যে, এই মাস যেমন রহমতের মাস। তেমনি মানুষের কৃত পাপ থেকে মুক্তি পাবার মাস। বলা হয়েছে, মহান আল্লাহ মানুষকে শুদ্ধ করতে যে গজব নাজিল করেন তা থেকে মুক্তির জন্য ইবাদত করার শ্রেষ্ঠ মাস পবিত্র মাহে রহমান। তাই আমরা মনে করি, এবারের রমজান মাস আলাদা এক সৌভাগ্যের মাস, করোনানামক যে ‘গজব’ এখনও গোটা পৃথিবীকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করছে, আল্লাহর ঘর পবিত্র কাবা শরীফ ও তার প্রিয় দোস্ত ইসলাম তথা মুসলিম জাহানের নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর পাক রওজা মুবারকে ইবাদত বা নামাজ আদায় প্রায় বন্ধ করেছিল তার থেকে মুক্তি স্থায়ী আদায়ের এমন সুযোগ নিশ্চয় আর হবার নেই। আমরা তাই আশা করবো, সমস্ত বিশ্বের মুসলিম রমজান মাসে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে রোজা রেখে তারাবি নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে সকল ধরনের গজব মুক্তির প্রার্থনা করবো। নিশ্চয় আল্লাহ আমাদের সহায় হবেন। আমাদের ক্ষমা করে রহমত মাগফিরাত ও নাজাত দান করবেন।