যশোরে কালাম হত্যা মামলায় রাজিবের স্বীকারোক্তি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর শহরের ধর্মতলার আবুল কালাম হত্যা মামলার আসামি রাজিব হোসেন বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বুধবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক পলাশ কুমার দালাল তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
রাজিব হোসেন জানিয়েছেন, আবুল কালাম ধর্মতলার হিন্দুপাড়ার রেললাইনের পাশের সরকারি জমিতে বসবাস করতেন। কোনো কাজকর্ম করতেন না। তবে চুরি করতেন। এ কারণে আবুল কালাম এলাকায় ‘চোর কালাম’ নামে পরিচিত। ঘটনার দিন আবুল কালাম চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন। এ সময় চিৎকার চেঁচামেচি শুনে আশপাশের লোকজন এসে তাকে পিটুনি দেয়। পরে পরিবারের লোকজন এসে আবুল কালামকে বাড়ি নিয়ে যান। এরপর আবুল কালাম হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করেন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু কয়েকদিন পর আবুল কালাম ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ধর্মতলা রেললাইন এলাকার ইব্রাহিম খলিলের ছেলে আবুল কালামের সাথে স্থানীয় দিপু শেখ ও পলি বেগমের জমির সীমানা প্রাচীর নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে ২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর গভীর রাতে দিপু শেখ ও পলি বেগমসহ তাদের সহযোগীরা আবুল কালামকে বাড়ি থেকে ধরে এনে বেদম মারধর করেন। পরে স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় ডাক্তার দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। কিন্তু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ৩০ অক্টোবর তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ৩ নভেম্বর তিনি কিছুটা সুস্থ হলে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরদিন ফের অসুস্থ হয়ে পড়লে আবারও তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ নভেম্বর আবুল কালাম মারা যান। এ ব্যাপারে নিহতের স্ত্রী সায়েরা বেগম ৭ জনের নাম উল্লেখ করে কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। রাজিব হোসেন ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। গত ১১ জানুয়ারি তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বিষয়টি জানতে পেরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে তার ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে বিচারক ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর রিমান্ড শেষ হওয়ায় বুধবার আসামি রাজিবকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। এদিকে মামলার এজাহারভুক্ত ৩ আসামি বুধবার আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরা হলেন, শহরতলীর খোলাডাঙ্গা কদমতলার শাহ আলমের ছেলে নাজমুল ওরফে নাজু, আরবপুর মৎস্য ভবন এলাকার অরুণ ঋষির ছেলে সাগর ঋষি ও মধু সুইপারের ছেলে দিপন ওরফে ডাবল।