তক্ষক ব্যবসায়ের কথা বলে যশোরে এনে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি, আটক ৩

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তক্ষক সাপের ব্যবসায়ের প্রলোভন দেখিয়ে রাজধানী ঢাকার ওমর আলী নামে এক ব্যক্তিকে কৌশলে যশোরে এনে আটকে রেখে মারধর ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে ৩ জনকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। গত সোমবার রাতে যশোরের উপশহরস্থ ডি-ব্লকের নির্মাণাধীন একটি ভবন থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এ সময় ওমর আলীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। আটক তিন জন হলেন, ঢাকার মিরপুর পল্লবীর ডি-ব্লক এলাকার সেকশন-৩ এর ৩৩ নম্বর বাসার মৃত মাজহারুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম (৪৬), যশোর শহরের পূর্ব বারান্দীপাড়ার ইকবাল আতাহার হোসেনের ছেলে হাসানুজ্জামান রুমি (৩২) ও শংকরপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকার আজগর আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৫)। অপরদিকে ভুক্তভোগী ওমর আলী চট্টগ্রামের স্বন্দীপের হারামিয়া এলাকার মৃত আবুল কালামের ছেলে। বর্তমানে তিনি ঢাকার শাহআলী থানার মিরপুর-১ এর ৪ নম্বর লেনের ই-ব্লক ২৩/২৪ নম্বর বাসার বাসিন্দা।
ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম জানান, আটক আরিফুল ইসলাম একজন প্রতারক। তিনি ওমর আলীকে তক্ষক সাপের ব্যবসায়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত সোমবার সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে নিয়ে যান। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সেখান থেকে আরিফুল ইসলামের সাথে যোগ দেন রিয়াদ উদ্দিন তুহিন ও হাসানুজ্জামান রুমি নামে আরও ২ জন। কিন্তু তাদের আচারণ দেখে ওমর আলীর সন্দেহ হয় এবং তিনি সীমান্ত এলাকায় যেতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এরপর তারা ওমর আলীকে সেখান থেকে যশোরে নিয়ে আসেন এবং উপশহরস্থ ডি-ব্লকে রিয়াদ উদ্দিন তুহিনের নির্মাণাধীন ৬ তলা ভবনের ৫ তলায় আটকে রেখে মারধর শুরু করেন। তার কান্নাকাটি শুনে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা তাকে রডচোর আখ্যায়িত করেন। রাত সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত তাকে সেখানে আটকে রেখে তার স্ত্রীর কাছে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এছাড়া তারা ওমর আলীর মোবাইল ফোনের বিকাশ অ্যাকাউন্টে থাকা ৪৮ হাজার ৫শ’ টাকা উত্তোলন করে নেন। সেই সাথে আরও টাকা দাবি করতে থাকেন। এরই মধ্যে ওমর আলীর স্ত্রী শামসুন্নাহার সুমী ঢাকার শাহআলী থানায় এ বিষয়ে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। পাশাপাশি ওমর আলীর স্বজনেরা যশোরের পুলিশ সুপারকে বিষয়টি অবহিত করেন। এরপর ডিবি পুলিশের একটি টিম ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপশহরস্থ ডি-ব্লকে রিয়াদ উদ্দিন তুহিনের নির্মাণাধীন ভবনের ৫ তলায় অভিযান চালিয়ে ওমর আলীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। এ সময় সেখান থেকে আরিফুল ইসলামসহ ৩ জনকে আটক করা হয়। তবে তার ২ সহযোগী রিয়াদ উদ্দিন তুািহন ও হাসানুজ্জামান রুমিকে পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে দড়ি, গামছা, লাঠি এবং পাশের জনৈক হযরতের বিকাশের দোকান থেকে প্রতারকদের রেখে দেয়া ১৪ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। ডিবি পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় গত মঙ্গলবার কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। বুধবার আটক আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।