যশোরের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ো হাওয়া শিলাবৃষ্টি রবিশস্য আমের মুকুল ও পানের বরজের ক্ষতি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাত্র এক ঘন্টা ৮ মিনিটের ব্যবধানে যশোরে ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এসময় জেলার বেশ কিছু এলাকায় ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। কৃষি বিভাগ বলছে ফাল্গুনের মাঝামাঝি সময়ে এ বৃষ্টিতে বোরো আবাদের জন্য আশির্বাদ হলেও মসুরি, পেঁয়াজ, আলুর জন্য ক্ষতির সম্ভাবনা। এর বাইরে যেসব এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে সেসব এলাকায় রবি ফসলের পাশাপাশি আমের মুকুল ও পানের বরজের ক্ষতি হয়েছে।


রোববার বিকেল চারটার পর থেকেই যশোরের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতে থাকে। সকাল থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত একেবারেই পরিস্কার থাকলেও চারটার পর থেকে আকাশে ভেসে ওঠ। এক পর্যায়ে দিনের বেলায় আকাশে যেন নেমে আসে সন্ধ্যা। হঠাৎ নেমে আসে অন্ধকার। সাথে মেঘের গর্জন। পরে বিকেল ৪ টা ৪২ মিনিটের সময় শুরু হয় বৃষ্টি। সাথে ঝড়ো হাওয়া।


যশোর বিমান বাহিনী নিয়ন্ত্রিত আবহাওয়া অফিসের সূত্রে জানাগেছে, রোববার বিকেল ৪ টা ৪২ মিনিটের সময় বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে চলে টানা ৫ টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত। টানা ১ ঘন্টা ৮ মিনিটে বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয় ১৩ মিলিমিটার। আবহাওয়া অফিসের একজন কর্মকর্তা বলেন, রোববার রাত ও সোমবার দিনের যেকোনো সময়ে আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বৃষ্টি থেমে গেলে সামান্য শীত অনুভূত হওয়ার আবহাওয়া গ্রীষ্মের তাপমাত্রার রূপ নেবে।
এদিকে রোববার বিকেলে জেলায় বেশকিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে এ শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় কী পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা প্রাথমিকভাবেও কোনো তথ্য দিতে পারেনি কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের সূত্রে জানাগেছে কমবেশি কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে। তবে মণিরামপুর উপজেলায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে বেশি।


এ বিষয়ে মণিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার আবুল হাসানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, রোববার বিকেলে বৃষ্টির সাথে উপজেলার কিছু এলাকায় শিল পড়েছে। বিশেষ করে উপজেলা সদর ও আশপাশ এলাকায় শিলাবৃষ্টি বেশি হয়েছে। উপজেলার অন্যান্য এলাকায় শিলাবৃষ্টি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা সে বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। তিনি বলেন, শিলাবৃষ্টির কারণে রবি ফসলের মধ্যে মসুরী, পানের বরজ ও আমের মুকুলের সামান্য ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর বাইরে বাঘারপাড়া, চৌগাছা ও শার্শার কিছু কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে বলে সেখানকার বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।


জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) দীপঙ্কর দাস বলেন, যশোরে এই মুহুর্তে মাঠে ৩২শ’ হেক্টর জমিতে মসুরী আবাদ রেেয়ছে। এর বাইরে ১৩৩২ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ রয়েছে। পেঁয়াজের মধ্যে ইতিমধ্যে বড় একটি অংশ হারভেস্ট হয়েছে। সাথে কিছু আলুও মাঠে রয়েছে। এই তিনটি ফসলের মধ্যে যেগুলো এখনও পর্যন্ত মাঠে রয়েছে সেগুলোর ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলেও তা ব্যাপক হবে আমরা মনে করছিনা। এর বাইরে মণিরামপুরসহ যেসব এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে সেখানকার আমের মুকুলসহ রবি ফসলের কিছু ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে কিছু ফসল ক্ষতি করলেও বোরোর জন্য আশির্বাদ হয়েছে। জেলার বিস্তীর্ণ মাঠে বোরো আবাদ করা হয়েছে। বৃষ্টির কারণে এসব জমিতে সেচ দেওয়া লাগবেনা বলে তিনি জানান।