খুলনায় এক পরিবারের তিন খুনের ঘটনায় একজনের স্বীকারোক্তি

0

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা॥ খুলনার কয়রায় স্বামী-স্ত্রী ও তাদের মেয়ের খুনের মামলায় গ্রেফতার আট আসামির মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। রোববার কয়রার জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তিনি জবানবন্দি দেন বলেন খুলনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান জানান। আবদুর রশিদ গাজী নামের এই আসামি ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন। এই মামলায় গ্রেফতার অন্যরা হলেন সাইফুল ইসলাম, আল আমিন হোসেন, আসলাম সরদার, আবদুল ওহাব, তাসলিমা, শামীমুল ইসলাম ও মোস্তফা কামাল। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান সোমবার দুপুরে তার কার্যালয়ে ওই খুনের ঘটনার বিস্তারিত জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। গত বছরের ২৬ অক্টোবর সকালে কয়রা উপজেলার বামিয়া গ্রামের একটি পুকুর থেকে মো. হাবিবুল্লাহ (৩৬), তার স্ত্রী বিউটি বেগম (৩২) ও মেয়ে হাবিবা সুলতানার (১২) লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার মাহবুব হাসান জানান, লাশ উদ্ধারের সময় হাবিবুল্লাহর হাত-পা দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল। আর বিউটি বেগম ও হাবিবা সুলতানার মুখে ও কপালে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। ওই পুকুরের পাশেই তাদের বাড়ি। ওই ঘটনায় হাবিবুল্লাহর মা মোছা. কোহিনুর বেগম বাদী হয়ে কয়রা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ সুপার বলেন, পরদিন নিহত হাবিবুল্লাহর প্রতিবেশী মো. জিয়াউর রহমান, মোছা. রাজিয়া সুলতানা, মো. রহমান, খালেকসহ সাতজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে জিয়াউর রহমান ও রাজিয়া সুলতানাকে তিন দিন করে রিমান্ডে নিলেও তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে এসপি জানান। তিনি বলেন, “মূলত জিয়াউর রহমান ও রাজিয়া সুলতানার মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় হাবিবুল্লাহকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়।” হত্যাকা-ে ছয়জন ছিলেন ধারণা করে এসপি বলেন, “বিকৃত যৌন লালসা, প্রতারণামূলক আর্থিক লেনদেন ও পরকীয়া সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরে হত্যাকা-টি দলবদ্ধভাবে সংগঠিত হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে।” জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে এসপি বলেন, দুই প্রতিবেশী নারী ও পুরুষের পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে হাবিবুল্লাহকে খুন করা হয়। খুনের সময় দেখে ফেলেন তার স্ত্রী বিউটি বেগম ও মেয়ে হাবিবা সুলতানা। তখন তাদেরও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশ সুপার জানান, প্রথমে আবদুর রশিদ গাজীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আরও সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। মাহবুব হাসান বলেন, প্রথমে স্থানীয় থানা-পুলিশ ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত করছিল। কিন্তু ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে পরবর্তী সময়ে তা জেলা ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারা ঘটনাটি এখনও তদন্ত করছে। ‘ক্লু উদঘাটন’ এবং আসামিরা গ্রেফতার হওয়ায় দ্রুত এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।