যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় একাধিক লবিস্ট নতুন ফার্ম নিয়োগে চিঠি চালাচালি

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সমুজ্জ্বল করতে যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক লবিস্ট ফার্ম সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। ২০১৪ সালে শিল্প শহর সাভারে ‘রানাপ্লাজা’ ধসের পর মার্কিন মুল্লুকে বাংলাদেশবিরোধী অপতৎপরতা রুখতে অন্তত দু’টি প্রতিষ্ঠানকে লবিস্ট হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। পরবর্তীতে চুক্তি নবায়নের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান দু’টি এখনো দায়িত্ব পালন করে চলেছে। মার্কিন প্রশাসন, নীতিনির্ধারক, মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং গণমাধ্যমের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখার মধ্যদিয়ে তারা সামাজিক ও অর্থনৈতিক অর্জনসহ ‘ইতিবাচক বাংলাদেশ’কে তুলে ধরার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে। ঢাকা ও ওয়াশিংটনে দায়িত্বপালনকারী বাংলাদেশি কূটনৈতিকরা মনে করেন- বাংলাদেশ সরকার এবং লবিস্টদের সক্রিয়তায় রানাপ্লাজা দুর্ঘটনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ দুনিয়াজুড়ে যে নেতিবাচক ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছিলো তা সফলতার সঙ্গে ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে গত মাসে র‌্যাবের বর্তমান ও সাবেক ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারির পর দেশটিতে লবিস্ট হিসেবে নতুন করে আরেকটি ল’ ফার্ম নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নিষেধাজ্ঞা ‘পুনর্বিবেচনা’র অনুরোধ জানিয়ে এরইমধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি জে ব্লিনকেনকে চিঠি পাঠিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। তার আগে দুই মন্ত্রী টেলিফোনে কথাও বলেন।
সরকারি সূত্র মানবজমিনকে এটা নিশ্চিত করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পক্ষে লবিস্ট হিসেবে কাজ করা বর্তমান দুই প্রতিষ্ঠানের বাইরে তৃতীয় কোনো কম্পিটেন্ট আইনি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। একাধিক নামও প্রস্তাব হিসেবে পেয়েছে ঢাকা। তাদের কার কি অভিজ্ঞতা বা অর্জন, কে কি পরিমাণ অর্থ চায়? তার বিস্তারিত খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। দায়িত্বশীল সূত্রটি মানবজমিনকে গতকাল সন্ধ্যায় এও জানিয়েছে, লবিস্ট নিয়োগে চিঠি চালাচালি শুরু হলেও এখনো কোনো প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন হয়নি। সূত্র বলছে, র‍্যাববের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ এনে নিষেধাজ্ঞা জারির আগে থেকেই ওয়াশিংটনভিত্তিক লবিস্ট প্রতিষ্ঠান বিজিআর এ নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করছে। তারা র‌্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগসহ নানা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের ব্যাখ্যা প্রচার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের লবিস্ট প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক চুক্তির আওতায় বিভিন্ন দেশের সরকার, রাজনৈতিক দল ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের স্বার্থরক্ষায় প্রচার ও সমর্থন আদায়ের কাজটি করে থাকে। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর, কংগ্রেসম্যানসহ দেশটির রাজনৈতিক ও নীতিনির্ধারক মহলে প্রতিষ্ঠানগুলো যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে। মার্কিন আইন ফরেন এজেন্টস রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্টের (ফারা) আওতায় লবিস্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি ছয় মাসে তাদের কার্যক্রমের বিবরণ যুক্তরাষ্ট্রের বিচার দপ্তরে জমা দিতে হয়। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিক ও রাজনৈতিক দলগুলোকে তারা কোনো চাঁদা দিয়ে থাকলে তার বিবরণও জমা দিতে হয়।