শীতে কাঁপছে তেঁতুলিয়া, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে আরও কমেছে তাপমাত্রা। এতে জেঁকে বসেছে শীত। দুপুর পর্যন্ত চারদিক ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকছে। রাত ও সকালের শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটাই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। বৃহস্পতিবার রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩ দশমিক ১ ডিগ্রি। আজ দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে হিমালয় থেকে ধেয়ে আসা হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ ও খেটে খাওয়া মানুষ। পেটের দায়ে তীব্র শীত উপেক্ষা করে অনেকে কাজে নামছেন। জেলার সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, পাথর ও চা শ্রমিক, দিনমজুর ও অসহায় ছিন্নমূল মানুষের সংখ্যা তিন লক্ষাধিক। গত এক মাসে জেলায় সরকারিভাবে প্রায় ২৪ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে জেলায় আরও প্রায় পাঁচ হাজারের মতো শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এর বেশিরভাগই জেলা বা উপজেলা সদরে বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে সরকারিভাবে বরাদ্দের কম্বল বিতরণ করা হয়েছে দুই থেকে তিনশ’।
সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের মীরগড় এলাকার তোফাজ্জল হোসেন জানান, ভোর ৫টা থেকে নদীতে কাজ করছি। শীত হোক আর গরম হোক কাজ না করলে আমাদের একদিনও চলে না। কাজ করবো টাকা নেবো সংসারের বাজার সদাই করবো—এটা আমাদের নিত্যদিনের কাজ। রিকশাচালক দবিরুল ইসলাম জানান, কয়েক দিন ধরে হিমালয়ের বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দিনের বেলাতেও কনকনে বাতাসে শরীর হিম হয়ে আসছে। গরম কাপড় পরেও রিকশা চালানো যায় না। রাস্তাঘাটে লোকজনও নেই। তাই রোজগারও কমে গেছে। বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের গাইঘাটা এলাকার দিনমজুর সফিয়ার রহমান জানান, ঠান্ডার জন্য ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। কাজ-কামও মেলে না। এই সময়টা আমাদের খুব কষ্টে যায়। সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাঈয়েদ নুর ই আলম জানান, গোটা ইউনিয়নে শীতার্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। সেখানে এ পর্যন্ত বরাদ্দ পেয়েছি দুই শতাধিক। জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মাসুম আলী জানান, জেলায় সরকারি বিভিন্ন ভাতাভোগী মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭৫ হাজার। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ জানান, চলতি মাসে তাপমাত্রা আরও কমে যাবে। কুয়াশাও বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে শৈত্যপ্রবাহ। জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, জেলায় প্রায় ২৪ হাজার কম্বল পাঁচ উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে। আরও শীতবস্ত্র চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে।