নড়াইলে নববধূর রহস্যজনক মৃত্যু

0

নড়াইল অফিস ॥ নড়াইলের কালিয়া উপজেলার যাদবপুর গ্রামে লাবিবা ফারহানা শ্রাবণী (১৯) নামে এক নববধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বিকেলে এই নববধূর রহস্যজনক মৃত্যুর পর থেকে এলাকায় চলছে নানা গুঞ্জন। মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগে বলা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের কারণে স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনে প্রাণ দিতে হয়েছে লাবিবা ফারহানা শ্রাবণীকে। অন্যদিকে মেয়ের শ^শুরবাড়ির লোকজন বলছেন, লাবিবা ফারহানা শ্রাবণী বিয়ের আগে থেকেই শ^াসকষ্টসহ নানারোগে ভুগছিলেন। শনিবার বিকেলের দিকে শ্রাবণী হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক কাজী মিজানুর রহমানের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
গৃহবধূ শ্রাবণীর স্বজন সূত্রে জানা যায়, কালিয়া উপজেলার যাদবপুর গ্রামের এবাদ বিশ্বাসের ছেলে হাসিবুরের সাথে খুলনার তেরখাদা উপজেলার হাড়িখালি গ্রামের ফারুক শেখের মেয়ে লাবিবা ফারহানা শ্রাবণীর আড়াইমাস আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর সুখে-শান্তিতে চলছিল হাসিবুর-লাবণীর দাম্পত্য জীবন। যাদবপুর গ্রামের স্থানীয় ইউপি মেম্বার লাহুউদ্দিন গাজী বলেন, ‘হাসিবুর ও তার পিতা-মাতা ন¤্র-ভদ্র স্বভাবের। এলাকায় পরিবারটি ভদ্র পরিবার হিসেবে পরিচিত। ওই পরিবারের সদস্যদের মাঝে ঝগড়া-বিবাদের কথা কখনো শুনি নাই। হাসিবুরের স্ত্রী শ্রাবণীর মৃত্যুর কথা শুনে হতবাক হয়েছি।’ প্রতিবেশী গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘হাসিবুরের স্ত্রী শ্রাবণী অসুস্থ হয়ে পড়লে আমি তার পরিবারের লোকজনের সাথে তাকে (শ্রাবণী) নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। শ্রাবণীর মৃত্যুর পর জানতে পারি হাসিবুরের শ^শুরবাড়ির লোকজন বলছেন শ্রাবণীকে মেরে ফেলেছে হাসিবুর ও তার পরিবারের লোকজন। শ্রাবণীর মৃত্যু নিয়ে এ ধরনের কথা শুনে হতবাক হয়েছি।’ হাসিবুরের প্রতিবেশী একাধিক নারী জানান, গৃহবধূ শ্রাবণীর সাথে শ^শুরবাড়ির লোকজনের তারা সুসম্পর্ক বজায় থাকতে দেখেছেন।
শ্রাবণীর পিতা ফারুক শেখ বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে হাসিবুর শ্রাবণীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। শনিবার বিকেলে শ্রাবণীকে স্বামী হাসিবুর শারীরিকভাবে নির্যাতন করলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে অচেতন অবস্থায় শ্রাবণীকে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’ হাসিবুরের পিতা এবাদ বিশ^াস জানান, ‘বৌমাকে আমরা মেয়ের মতো দেখতাম। আমার ছেলে হাসিবুর তাকে বিয়ের পর স্ত্রীর মর্যাদা দিতে ন্যুনতম কার্পণ্য করেনি। বৌমা শ্রাবণীর স্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার ছেলে ও পরিবারের সদস্যদের নামে অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে।’ কালিয়া থানা পুলিশের ওসি কণি মিয়া জানান, ‘গৃহবধূ লাবিবা ফারহানা শ্রাবণীর মৃত্যুর ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত তার মৃত্যুর কারণ বলা যাবে না।’