প্রবাসী আয়ে চমক না থাকলেও বাড়বে রেমিট্যান্স

0

গোলাম মওলা॥ ২০২১ সালের শেষ ছয় মাসের মতো ২০২২ সালেও প্রবাসী আয়ে চমক থাকছে না। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহে গতি আসার সম্ভাবনা নেই। তবে করোনার আগের স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে রেমিট্যান্স কিছুটা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, স্বাভাবিক সময়ে প্রবাসীরা মাসে গড়ে ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার পাঠাতেন। কিন্তু মহামারি শুরুর পর প্রবাসী আয় কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এ সময় রেমিট্যান্সে রেকর্ডও হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়। একক মাসে প্রবাসী আয় বেড়ে ২০২০ সালের জুলাইতে প্রায় ২৬০ কোটি ডলারে উঠে যায়। কিন্তু গত নভেম্বরে যা এসেছে, তা বিগত ১৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ ধারাবাহিকতায় এ বছর তাই প্রবাসী আয়ে কোনও চমক থাকছে না বলে জানান বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন বিদেশে শ্রমিক যাওয়া বন্ধ থাকলেও এখন অনেকে যাচ্ছে। এ ছাড়া ওমিক্রনের প্রভাব কেমন হবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না। তবে আগের স্বাভাবিক সময়ের মতো ২০২২ সালেও রেমিট্যান্স আসতে পারে।’ বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বিশ্ব পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসার পর থেকে প্রবাসী আয়ে পতন দেখা দেয়। যা অব্যাহত থাকে টানা ছয় মাস। ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যোগাযোগ চালু হওয়ায় অবৈধ পথে প্রবাসীদের টাকা পাঠানোর সুযোগও বেড়েছে। এ কারণেও বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স কমছে। এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রতি ডলারের মূল্য ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা। খোলাবাজারে তা ৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ১৯৬ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে আসে ১৭৮ কোটি এবং মার্চে আসে ১৯১ কোটি ডলার। এপ্রিলে ২০৬ কোটি ডলার ও মে মাসে ২১৭ কোটি ডলার পাঠান প্রবাসীরা। মে থেকে আয় কমতে শুরু করে। গত নভেম্বরে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। এদিকে সম্ভাবনার কথা হলো—২০২০ সালের চেয়ে ২০২১ সালে দ্বিগুণ কর্মী গেছেন বিভিন্ন দেশে। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, ২০২০ সালে বিদেশে গেছেন ২ লাখ ১৭ হাজার ৪৬৯ জন। যদিও ওই বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাস বিদেশ যাওয়া পুরোপুরি বন্ধ ছিল। ২০২১ সালের শুরু থেকে বিদেশ যাওয়া বাড়তে থাকলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে এপ্রিল-মে ও জুলাই-আগস্টে তা আবার কমে যায়। সব মিলিয়ে গতবছরের ১১ মাসে দেশ থেকে ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৮৯৩ জন বিভিন্ন দেশে গেছেন। ১২ মাসের হিসাবে যা সাড়ে ৫ লাখ ছাড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।