যশোর জেনারেল হাসপাালে ইন্টার্ন চিকিৎসক ছাত্রলীগ ও কর্মচারীদের মধ্যে তুলকালাম

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক ছাত্রলীগ ও কর্মচারীদের মধ্যে গতকাল দুপুরে দফায় দফায় সংঘর্ষসহ বিশৃঙ্খল ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে সমঝোতা বৈঠকে বসেও শীর্ষ কর্মকর্তা ও জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের সামনে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। ব্যর্থ হয়েছে মীমাংসা চেষ্টা। এ ঘটনায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ফোন পেয়ে শহরের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হাসপাতালে যান। দুই পক্ষে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুর ২টার দিকে যশোর মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও হাসপাতাল ইন্টার্ণ চিকিৎসক পরিষদের (ইচিপ) সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাজাদ জাহান দিহান এক্স-রে করতে যান। এ সময় এক্স-রে বিভাগের কাউন্টারে অফিস সহকারী মেহেদী হাসান দায়িত্ব পালন করছিলেন। ডা. শাহাজাদ জাহান দিহান ভীড়ের মধ্যে তার এক্স-রেটি অতি দ্রুত করে দেয়ার জন্যে মেহেদী হাসানকে বলেন। সাধারণ রোগীরা এতে বাধ সাধে। এক পর্যায়ে ডা. দিহান ও কর্মচারী মেহেদী হাসানের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। এ সময় ডা: দিহান ইণ্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. সাইফুদ্দিন আহমেদ শিহাব ও ইণ্টার্ন চিকিৎসক ডা.সোহানকে ফোন করে ডেকে আনেন এবং কর্মচারী মেহেদী হাসানকে মারপিট করেন। এতে কর্মচারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তারা জোটবদ্ধ হয়ে ডা. দিহানকে বেদম প্রহার করেন।
এরপর ইন্টার্ন চিকিৎসক ও কর্মচারীদের দু’পক্ষই বিএমএর সভাপতি ডা. একেএম কামরুল ইসলামের শরণাপন্ন হন। কর্মচারী দীপক, মেহেদী হাসানসহ কয়েক জন জেনারেল হাসপাতালের সামনে বেসরকারি কিংস হসপিটালে থাকা ডা, একেএম কামরুল ইসলামের সাথে দেখা করে ঘটনা সম্পর্কে অভিযোগ করেন। সেখান থেকে তারা হাসপাতালে আসার সাথে সাথে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মেহেদী হাসানকে তৃতীয় দফা মারপিট করেন। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষকে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আক্তারুজ্জামান তার কার্যালয়ে ডেকে দু’পক্ষের বক্তব্য শুনছিলেন। সেখানেও দুপক্ষ বিতর্ক হাতাহাতি কিল ঘুষিতে জড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি তত্ত্বাবধায়কের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বিষয়টি বিএমএ সভাপতি কামরুল ইসলাম বেণু, সাধারণ সম্পাদক ডা. এমএ বাশার, যশোর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েলকে জানানো হয়। তারা তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে ঘটনা মীমাংসা করার জন্যে বৈঠকে বসেন। বেলা ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বৈঠক করেও তারা ঘটনা মীমাংসা করতে ব্যর্থ হন। কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় বৈঠক। তখন ইণ্টার্ণ চিকিৎসক ও কর্মচারী উভয় পক্ষ প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণের পক্ষে মত দেন। এ সময় ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় উৎসব পালনের বিষয়টি মাথায় রেখে কোন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়নি। কর্তৃপক্ষ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের আশ্বাস দেন। এরপর নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আক্তারুজ্জামান সাংবাদিকদের ঘটনা সম্পর্কে ব্রিফিং করেন। এসময় তিনি বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসক ও কর্মচারীদের মধ্যে একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তার উপস্থিতিতে কার্যালয়ে এসেও হাতাহাতি মারামারি করেছে। মীমাংসা বৈঠক কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে। তবে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস এক সাথে পালন করার জন্যে তারা একমত হয়েছেন।