কাউন্সিলরসহ জোড়া খুন, ‘হিট স্কোয়াডে’ ছিলো ৬ জন: পুলিশ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ কার্যালয়ে ঢুকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল (৫০) ও আওয়ামী লীগ কর্মী হরিপদ সাহাকে (৫৫) এলোপাতাড়ি গুলি করে হত্যার সময় হিট স্কোয়াডে ছয় জন সন্ত্রাসী ছিলো বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, খুনের আগে মামলার ৫ নম্বর আসামি সাজনের বাসায় বৈঠক করা হয়েছিলো। সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার বলেন, ‘আমরা তথ্যনুসন্ধানে নিশ্চিত হয়েছি হিট স্কোয়াডে ছিলো ছয় জন। তারা হলো- এজহারনামীয় ১ নম্বর আসামি শাহ আলম, ২ নম্বর আসামি জেল সোহেল, ৩ নম্বর আসামি সাব্বির হোসেন, ৫ নম্বর আসামি সাজন, এজাহারবহির্ভুত স্থানীয় নাজিম নামে এক যুবক ও ফেনী থেকে আগত অজ্ঞাত এক সন্ত্রাসী। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শাহ আলম ও নাজিমকে চিহ্নিত করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনুসন্ধানে আমরা আরও জানতে পেরেছি, এজহারনামীয় আসামি সাজনের বাসায় বৈঠক শেষে কিলিং মিশনে যায় অন্য আসামিরা। কিলিং মিশনে থাকা অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে।’
জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের দিন দুপুরে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া ওই ছয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ঘটনাস্থলের অদূরে সংরাইশ এলাকার মোহাম্মদ রাব্বি ইসলাম অন্তুর বাসায় বৈঠক করে এবং দুপুরের খাবার খায় সেখানে। এ মামলার এজাহারভুক্ত ৮ নম্বর আসামি জিসান মিয়া ও মোহাম্মদ রাব্বি ইসলাম অন্তু নামের ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। রোববার (২৮ নভেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোমবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে অন্তু কুমিল্লার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এদিকে কাউন্সিলর সোহেল ও হরিপদ হত্যায় অংশ নেওয়া আসাসিদের আরেকটি ভিডিও হাতে পেয়েছে পুলিশ। সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ হওয়া ৩২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, গুলি ছুড়তে ছুড়তে দৌড়াচ্ছে এক নম্বর আসামি শাহ আলম ও অজ্ঞাত এক যুবক। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার বলেন, ‘এজাহারে নাম না থাকলেও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, শাহ আলমের সঙ্গে থাকা যুবকের নাম নাজিম। তার বাড়ি কুমিল্লা নগরীতে। তিনিও ওই হত্যায় অংশ নিয়েছিলেন।’
গত ২২ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে নগরীর পাথরিয়াপাড়া থ্রি স্টার এন্টারপ্রাইজে কাউন্সিলর কার্যালয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন কাউন্সিলর সোহেল ও হরিপদ সাহা। কাউন্সিলর সোহেল কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। হরিপদ সাহা নগরীর ১৭নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সাহাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। এছাড়া এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরও পাঁচ জন কুমিল্লা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জোড়া খুনের ঘটনায় গত ২৩ নভেম্বর রাতে কাউন্সিলর সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আলোচিত এই জোড়া খুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয় জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।