খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস, চিকিৎসা নেই ভারতীয় উপমহাদেশে-মেডিকেল বোর্ড

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। তার টানা তিন দিন রক্তক্ষরণ হয়েছে। আবার রক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার ডায়াবেটিস, লিভারসহ সমস্যাগুলো নিয়ে এরপর ব্লিডিং হলে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তাই অনতিবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়েছেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা। গতকাল রোববার গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসা ফিরোজার নিচতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক ডা. এফ এম সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, উনাকে (খালেদা জিয়াকে) ভর্তি করার পর ম্যাসিভ রক্তবমি হয়। কলাপস করে সকে চলে গিয়েছিলেন। লাইভ সেভিং ফ্লুইড দেয়া হয়, রক্ত দেয়া হয়। দুই ব্যাগ প্লাজমা দেয়া হয়। লিভারে রক্তক্ষরণ হয়। প্রাথমিকভাবে এই রক্তক্ষরণ বন্ধ করা হয়। পায়ুপথেও রক্ত যাচ্ছিল। লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে শুধু দেশের না উপমহাদেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এর চেয়ে বেশি কিছু আর করার নেই। কিন্তু ঝুঁকির মাত্রা লিভারে রক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা আগামীতে আরও বাড়বে। তিনি বলেন, আমরা হাসপাতালে অথোরিটিকে জানিয়েছি, উনার রিলেটিভকে জানিয়েছি তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনারা ‘টিপস’ অ্যারেঞ্জ করেন। এখনো সময় আছে ওনি কিছুটা স্ট্যাবল আছেন। কিন্তু একটা সময় আসতে পারে যখন হয়তো ওনাকে কোথাও শিফট করাটাও ডিফিকাল্ট হয়ে যেতে পারে অথবা অসম্ভবও হতে পারে। ওনার সুস্থতার জন্য এমন কিছু টেকনোলজি ব্যবহার করতে হবে- এটা বাংলাদেশে নেই। আমরা একটা কথা বলতে পারি- ওনার রিস্ক খুব হাই। ব্লিডিং হওয়ার সম্ভাবনা আছে। মোটকথা আমরা অসহায় ফিল করছি।


‘টিপস’ এর ব্যাখ্যা দিয়ে ডা. সিদ্দিকী বলেন, টিপস যে টেকনোলজিটা এটা ইউকের কিংস কলেজ হাসপাতালে আছে। চিকিৎসাগুলো জার্মানি এবং ইউএসএ-তে হয়। সেসব দেশেও এই ট্রিটমেন্ট ব্যবস্থা বেশি অ্যাবেইলেবল নেই। কোনো রোগীর যদি এমন কোনো সমস্যা হয় তাহলে তাকে হেলিকপ্টারে করে ওই হাসপাতালে পাঠায়। একটা পেশেন্টের জন্য একটা সেটআপ বা কোনো হাসপাতালকে তো ঢাকায় নিয়ে আসা সম্ভব নয়। আর চার মাস আগে যদি উনি বিদেশে যেতে পারতেন, তাহলে হয়তো এরকম ঝুঁকিপূর্ণ ব্লিডিংয়ের সম্মুখীন হতেন না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে আমরা ২৪ ঘণ্টা ওনাকে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত ছিলাম। সেই সময় তো আমাদের সংবাদ সম্মেলন করা সম্ভব না। এমনকি আজকে যে সংবাদ সম্মেলন করছি সেটার জন্য গতকাল ম্যাডামের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি। ড. এফএম সিদ্দিকী বলেন, আমরা যারা চিকিৎসা করি, আমাদের মধ্যে একটা লিমিটেশন আছে। সেটা হচ্ছে যে, আমাদের কাছে কোনো অসুস্থ রোগী এলে তখন তাকে ম্যানেজ করি পাশাপাশি আমরা লোকাল অভিভাবককে তার রোগের বিষয় জানাই। আমরা ইতিমধ্যে ম্যাডামের ক্লোজ রিলেটিভদের তার সর্বশেষ স্বাস্থ্যের বিষয়ে জানিয়েছি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রফেসর এ কে এম মহসিন, প্রফেসর শামসুল আরেফিন, প্রফেসর মোহাম্মদ নুরুদ্দিন, ডাক্তার এজেডএম জাহিদ হোসেন, ডা. আল মামুন প্রমুখ।