দেড় বছরের প্রকল্প: আড়াই বছরে সম্পন্ন হয়েছে ৩০ ভাগ

0

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা॥ কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ১০তলা একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ দেড় বছরে (১৮ মাস) সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও আড়াই বছরে (৩০ মাস) শেষ হয়েছে মাত্র ৩০ ভাগ কাজ। এছাড়া নিম্নমানের কাজের অভিযোগও রয়েছে। এর মধ্যে নিরাপত্তা বলয় না থাকায় নির্মাণ কাজের রড ছুটে গিয়ে এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। রোববার (২১ নভেম্বর) এ ঘটনার পর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২২ নভেম্বর) কলেজের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেছেন তারা। শিক্ষার্থীরা জানান, রোববার পরীক্ষা শেষে কলেজ থেকে বের হচ্ছিলেন মাস্টার্সের ছাত্র নাছিম আহমেদ। নির্মাণাধীন ১০তলা ভবনের নির্মাণ কাজের রড ছুটে গিয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। দ্রুত তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার পর নির্মাণ কাজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০১৯ সালের মে মাসে কাজ শুরু হয়। ১৮ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ৩০ মাস পেরিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত মাত্র ৩ তলা ছাদ ঢালাই দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নির্মাণাধীন ভবনের পাশ দিয়ে গেলেই ইট-সুরকি-বালু-সিমেন্ট গায়ে পড়ে। নাছিমের মতো যে কারও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিলে আর কাজ করতে দেয়া হবে না জানিয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক আনসার হোসেন বলেন, এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা রিপোর্ট দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এন হোসেন ও শামীম নামের দুই ঠিকাদার ১০তলা ভবন নির্মাণের কাজ পায়। ২০১৯ সালের ২০ মে তারা কার্যাদেশ পান। দরপত্র মূল্য ধরা হয় ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকার ওপরে। ১৮ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। ঠিকাদার এসএম শামীম বলেন, প্রথমে ভবনের জন্য রাস্তার উল্টো পাশের জায়গা নির্ধারণ করা হয়। পরে পরিবর্তন করে সয়েল টেস্ট করাসহ নানা কারণে কাজ শুরু করতেই ৮ মাস লেগে যায়। তাছাড়া করোনা ও আমার অন্য কাজ চলায় এই বিলম্ব হয়েছে। বড় কোন বিপর্যয় না হলে আগামী ১ বছরের মধ্যেই কাজ শেষ করতে পারব। রড পড়ে দুর্ঘটনার ব্যাপারে ঠিকাদার শামীম বলেন, যে ছাত্র আহত হয়েছে, তিনি আমার আত্মীয়। তার সঙ্গে সমঝোতা করে নিয়েছি। আর নিম্নমানের কাজের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী সাহেব আলী বলেন, অন্য কাজের কারণে দেরি করায় ঠিকাদার নিজেই এখন বিপাকে পড়েছেন। রডসহ সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। এখন লোকসান দিয়েই কাজ করতে হচ্ছে। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেই আগামী দেড় বছরের মধ্যে ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করা হবে।