‘সুশাসন ও গণতন্ত্রকে মূল্যায়ন না করে আমরা উন্নয়নকে প্রাধান্য দিচ্ছি’

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নত দেশে উত্তরণের যাত্রায় গণতন্ত্রকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন সাবেক পরিকল্পনা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী এবং বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেন, সুশাসন এবং গণতন্ত্রকে মূল্যায়ন না করে আমরা উন্নয়নকে প্রাধান্য দিচ্ছি। তিনি এই পদ্ধতিতে প্রোপাগান্ডা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এভাবে চলতে থাকলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের এই উন্নীত হওয়া কেবল এক টুকরো কাগজ হিসেবে থাকবে, বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যাবে না। সোমবার সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত এক জাতীয় সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
সংলাপটি তিনটি পৃথক অধিবেশনে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম অধিবেশনে ‘এলডিসি থেকে মসৃণ এবং টেকসই উত্তরণের জন্য প্রস্তুতি’ প্রসঙ্গে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. আবদুল মঈন খান বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ নির্ধারক শর্ত তিনটি- গড় জাতীয় আয়, মানব সম্পদ সূচক এবং অর্থনৈতিক দুর্বলতা সূচক। তিনি উল্লেখ করেন, গণতন্ত্র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, যেটি কিনা এই তিনটি শর্তের অন্তর্ভুক্ত নয়। বিগত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের অর্জনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, পোশাক শিল্পে বিশ্বে স্বীকৃতি লাভ, জিডিপি তে অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশকে ছাড়িয়ে যাওয়া- এসব বাংলাদেশের অর্জন। তবে একই সাথে উদ্যোক্তাদের আত্মবিশ্বাসের অভাবে তারা বিশ্বে তাদের অর্জন তুলে ধরতে পারছে না।দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, অর্থ পাচার, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, ধর্ষণ, বিরোধী দলের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অযাচিত মামলার মতো ঘটনাগুলো বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্তরায় বলে তিনি মনে করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উন্নত দেশে পরিণত হতে হলে এই বিষয়গুলোও গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের জন্য এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা জরুরি। দ্বিতীয়ত, তিনি সক্ষমতা অর্জনের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন। বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংকের ভূমিকার কথা তিনি উল্লেখ করেন।স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নীত হওয়া উপলক্ষ্যে এই সংলাপের আয়োজন করে সিজিএস। রাজধানীর একটি হোটেলে দিনব্যাপী আয়োজিত সংলাপটির উদ্বোধন করেন সিজিএস এর চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী, সিজিএস এর গবেষণা পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহ-আল-মামুন এবং সিজিএস এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।
এছাড়াও এতে বক্তব্য রাখেন বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের বাংলাদেশ ও ভুটান এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেমবন। আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবং সাবেক মন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম, বাংলাদেশ উইম্যান চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সেলিমা আহমেদ এমপি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. হাবিবে মিল্লাত এমপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং উন্নয়ন অন্বেষণ এর চেয়ারপারসন অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর মহাসচিব অধ্যাপক ড. এম এ আজিজ, র‌্যাপিড এর নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. এম আবু ইউসুফ এবং ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক পারভেজ করীম আব্বাসী।