দুবাইয়ে বসে বাংলাদেশে ‘আইস’ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ

0

রিয়াদ তালুকদার॥ দুবাইয়ে বসে বাংলাদেশের মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছে একটি চক্র। শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) মাদক চোরাকারবারি সিন্ডিকেট চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানতে পারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। কর্মকর্তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এই চক্রের সদস্যরা। সীমান্তবর্তী মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবা সংগ্রহ করে এই চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিচ্ছে। তবে তদন্তের স্বার্থে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা দুবাই থেকে আইস ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকারীদের নাম প্রকাশ করতে চাননি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, রাজধানীতে আইস এবং ইয়াবা সরবরাহের অভিযোগে মামুন হোসেন (৩৫) নামে একজনকে ৬০০ পিস ইয়াবাসহ কুড়িল থেকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদিকে তাজউদ্দীন টিটু (৪৩) নামে এক ব্যক্তিকে একটি প্রাইভেট কারসহ খিলক্ষেত থানাধীন ঢাকা ময়মনসিংহ রোড থেকে পাঁচগ্রাম আইসসহ গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া, অভিযানে মিজানুর রহমান (৫৩) নামে এক ব্যক্তিকে বনানীর নিজ ফ্ল্যাট থেকে দশ গ্রাম আইসসহ গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাদক ব্যবসায়ী লিটন মাহমুদকে (৩২) খিলগাঁও এলাকার মদিনা হোটেলের সামনে থেকে ১০০ গ্রাম আইসসহ গ্রেফতার করা হয়। মেহেদী হাসান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা রাজধানীতে মাদক ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। মাদক চোরাকারবারিদের বিষয়ে তাদের কাছে থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। এ ব্যবসায় জড়িত অনেকের নাম আমরা পেয়েছি। তদন্তের স্বার্থে এখনই প্রকাশ করতে চাচ্ছি। তারা মূলত টেকনাফ থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট এবং আইস সংগ্রহ করে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ডিলার এবং খুচরা মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতো।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, দুবাই থেকে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ এর কয়েকটি চক্রের সন্ধান তারা পেয়েছেন। দুবাই থেকে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে যারা কাজ করছে তারা তিনটি ধাপে বাংলাদেশে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছে। প্রথম ধাপে মিয়ানমার থেকে আসা আইস কিংবা ইয়াবা একটি গ্রুপ টেকনাফে রিসিভ করে। পরবর্তীতে এই গ্রুপের সদস্যরা ঢাকায় তাদের নিজস্ব মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে ডেলিভারি দেয়। আর তৃতীয় ধাপ কাস্টমার সন্ধানের কাজ করে। কর্মকর্তারা বলেন, বিভিন্ন সময় তদন্তে দেখা গেছে এসব মাদকের টাকা হুন্ডি এবং অনেকের ব্যাংক ট্রানজেকশনের মাধ্যমে পাচার হয়ে যায়। এসব ঘটনায় যারা জড়িত তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখা হবে। টাকা বিদেশে হুন্ডির মাধ্যমে গেলে কিভাবে কাদের মাধ্যমে যায় এ বিষয়টি খুঁজে দেখতে আমরা তদন্ত করছি। বিদেশে বসে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছে এমন আরও অনেকের নাম ও তথ্য পাওয়া গেছে, এ বিষয়ে কাজ চলছে।