‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করলো ধনী দেশগুলো

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি প্রাক শিল্পায়ন যুগের তুলনায় ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আটকে রাখার প্রতিশ্রুতি ছাড়াই স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে শেষ হল বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ২৬। সম্মেলনের আগে যে আশার বাণী শুনিয়েছিলেন তার কোনো প্রতিফলনই ঘটেনি চুক্তিতে। পরিবেশবাদীরা এই সম্মেলনকে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর প্রতি ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। অবশ্য এবারই প্রথম গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমাতে জীবাশ্ম জ্বালানি ও কয়লার ব্যবহার কমানোর পরিকল্পনা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে জলবায়ু তহবিলের প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড়ের ব্যাপারে শিল্পোন্নত দেশগুলোর কোনো প্রতিশ্রুতি আদায় করা যায়নি।
৩১ অক্টোবর শুরু হওয়া সম্মেলনের সমাপনী দিন ছিল শুক্রবার। তবে নির্ধারিত সময়ে খসড়া চুক্তি নিয়ে ঐক্যমত না হওয়ায় শনিবার আলোচনার সময় বাড়ানো হয়। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় সময় সন্ধ্যার পর ‘গ্লাসগো জলবায়ু চুক্তি’ সর্বসম্মতভাবে গৃহিত হয়। তবে সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশা ছিল যেই জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য অর্থ ছাড়-সেই বিষয়টি একরকম চেপেই যাওয়া হয়েছে চুক্তিতে। কয়লা ও জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর প্রস্তাবের কারণে খসড়া চুক্তি নিয়ে সবচেয়ে বড় বাধা ছিল ভারত। দেশটির সঙ্গে আপত্তি জানিয়েছিল চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা, নাইজেরিয়া ও ইরান। তবে চূড়ান্ত অধিবেশনে ভারত খসড়া চুক্তিতে অব্যাহত কয়লা শক্তি ‘পর্যায়ক্রমে শূণ্যে নামিয়ে আনা’র পরিবর্তে ‘পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনা’ শব্দগুচ্ছ প্রস্তাব করে। সদস্য দেশগুলোর এই আচরণে সম্মেলনের সভাপতি অলোক শর্মা তাই সমাপনী অধিবেশনে বলেছেন, যেভাবে সম্মেলন শেষ হলো তাতে তিনি ‘আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’ জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছেন বিশ্ব ‘ঝুঁকির মুখে। আমরা এখনও জলবায়ু বিপর্যয়ের দরজায় কড়া নাড়ছি…সময় এসেছে জরুরি পরিস্থিতিতে চলে যাওয়ার-নতুবা আমাদের শূন্যে নামিয়ে আনার সুযোগ নিজেই শূন্য হয়ে যাবে।’ দাতব্য সংস্থা অ্যাকশন এইডের নীতি নির্ধারণী পরিচালক লার্স কোচ চুক্তিতে শুধুমাত্র কয়লার ব্যবহার সীমিত করে আনার উল্লেখ করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এটি তেল ও গ্যাস উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ার জন্য এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে আহরণ ও দূষণ চালিয়ে যাওয়া ধনী দেশগুলোকে বিনামূল্যে পাস দিয়েছে।’ পরিবেশবাদী সংগঠন আর্থ ইন্টারন্যাশনালের সুহৃদ সারা শ’ বলেছেন, শুধু ১ দশমিক ডিগ্রির কথা বলা অর্থহীন, যদি চুক্তিতে দেওয়ার কিছু না থাকে। কপ২৬কে বিশ্বের দক্ষিণের দেশগুলোর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে স্মরণ করা হবে।’