ঢাকায় স্মরণ সভায় মির্জা ফখরুল: তরিকুল ইসলাম শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছেন কীভাবে বেঁচে থাকা যায়, জনগণের জন্য কাজ করা যায়

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ রাজধানী ঢাকায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামকে স্মরণ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শেষ পর্যন্ত তিনি লড়াই করেছেন কীভাবে বেঁচে থাকা যায়, কীভাবে জনগণের জন্য একটু কাজ করা যায়। গতকাল শনিবার দুপুরে ইনস্টিটিউট অব ডিপে¬ামা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ মিলনায়তনে এক স্মরণ সভায় তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তরিকুল ইসলাম স্মৃতি সংসদ এ স্মরণসভার আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা একটি উদারপন্থি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করছি। তরিকুল ইসলাম জীবন দিয়ে সেই কাজ করে গেছেন। নির্যাতনের কারণে শেষ দিকে তরিকুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। বিশেষ করে এরশাদের নির্যাতনের কারণে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুখের কাছে তিনি পরাজিত হননি। শেষ পর্যন্ত তিনি লড়াই করেছেন কীভাবে বেঁচে থাকা যায়, কীভাবে জনগণের জন্য একটু কাজ করা যায়। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ আসার সময় পথে দেখলাম বাস চলছে না, মানুষ হাঁটছে, মোটরসাইকেল চলছে। কারণটা আপনারা সবাই জানেন। ডিজেল-কেরোসিনের দাম হঠাৎ করে ১৫ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার।’ তিনি বলেন, ‘মানুষ যাবে কোথায়? একদিকে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে হু হু করে, অন্যদিকে এখন আবার জ্বালানির দাম বাড়িয়ে দিলো। ফলে কী হবে? জিনিসপত্রের দাম আরও দ্বিগুণ বাড়বে। সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? তাদেরতো এখন না খেয়ে অপুষ্টিতে ভুগে মৃত্যুবরণ করার অবস্থা হয়েছে।’ বিএনপির মহাসচিব বলেন, কোনো বিকল্প নেই। একমাত্র পথ হচ্ছে এদের সরিয়ে দিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। আসুন, আমরা সেই লক্ষ্যে সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। আমরা সবাই রাজপথে নেমে আসি এবং আমাদের শক্তি দিয়ে, জনগণের শক্তি দিয়ে এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে একটা জনগণের সরকার, জনগণের সংসদ প্রতিষ্ঠা করি। তিনি আরও বলেন, এই সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে একটা অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য কাজ করছে। এটা না যে, এমনি হয়ে যাচ্ছে, তা নয়। তারা পরিকল্পনা করেছে যে বাংলাদেশকে তারা অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করবে। একটা নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত করবে। অন্যের ওপর নির্ভরশীল একটা রাষ্ট্রে পরিণত করবে, সেই কাজ তারা করছে। ফখরুল বলেন, সরকার যে উন্নয়নের এত কথা বলে, উন্নয়ন-মেগা প্রজেক্ট, সবকিছুর মূলে হচ্ছে ঋণ নিয়ে বাংলাদেশকে ঋণগ্রস্ত করে ফেলা। বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে একটা হাঁটু ভেঙে দেওয়া জাতিতে পরিণত করা। সেজন্য আজকে চতুর্দিকে তাকিয়ে দেখুন- দুর্নীতি-চুরি ছাড়া আর কিছু নেই। স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করে বিএনপির নেতৃত্বে আমাদের রাস্তায় নামতে হবে। রাস্তায় নামা ছাড়া কোনো স্বৈরাচার ক্ষমতা ছাড়ে না। স্মরণ সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল¬াহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ। স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নার্গিস বেগম।