ঝিকরগাছার শিমুলিয়ার আ.লীগ প্রার্থী ও বিদ্রোহীর পক্ষে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে যশোরের ঝিকরগাছার শিমুলিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হকের ওপর ‘নৌকার প্রার্থী’র সমর্থকদের হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখনও উত্তেজনা রয়েছে। গতকাল সোমবার দুই পক্ষ যশোরে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে। জহুরুল হকের পক্ষে ঝিকরগাছা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ‘মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের’ ব্যানারে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্বারকলিপি পেশ ও সংবাদ সম্মেলন করা হয়। অপরদিকে জহুরুল হকের ওপর হামলার ঘটনা কাল্পনিক ও মিথ্যা দাবি করে একই দিন প্রেসক্লাব যশোরে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিমুলিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীকের মো. মতিয়ার রহমান সরদার।


এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বিকালে ঝিকরগাছার শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও তিনবারের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক তার লোকজন নিয়ে প্রচারণায় যান। এসময় নৌকার প্রার্থীর লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। এসময় এলোপাতাড়ি সংঘর্ষে চেয়ারম্যান প্রার্থী জহুরুল ও তার সফরসঙ্গী আবু সাইদ গুরুতর আহত হন। পরে তাদেরকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে ঝিকরগাছা উপজেলা মু্িক্তযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ‘ বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের’ ব্যানারে যশোর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্বারকলিপি পেশ করা হয়। স্মারকলিপি প্রদান শেষে এ পক্ষ প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ ঝিকরগাছা উপজেলা শাখার সভাপতি ডা. বিল্লাল হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কে জিতবেন কে হারবেন আমাদের কষ্ট নয়। আমাদের কষ্ট হলো যখন দেখি ৭১’র কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা লাঞ্ছিত, অপমানিত ও আক্রান্ত হন। বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হকের ওপর যে নগ্ন হামলা হয়েছে তা আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে সহ্য করতে পারি না। এজন্য এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবিতে আমরা রাজপথে নেমে এসেছি। সংবাদ সম্মেলন থেকে অভিযোগ করা হয়, ৬৫ বছরের একজন বয়োজ্যেষ্ঠ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে যারা মারপিট করেছে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার লোক হতে পারে না। তাই এ বিষয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এসময় সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান শাহেদ রেজা খোকা, আনিসুজ্জামান সবুজ, সিরাজ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রেসক্লাবের আরেকটি সভাকক্ষে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মতিয়ার রহমান সরদার। এসময় তিনি অভিযোগ করেন, বিদ্রোহী প্রার্থী জহুরুল হক আমাকে ঘায়েল করতে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়কে হাতিয়ার করেছেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হককে ষড়যন্ত্রকারী আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করে বলেন, সে পরিকল্পিতভাবে তার ওপর হামলার নাটক সাজিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চালাচ্ছে। মুলত এ ঘটনার সাথে আমার দলের কোনো লোক জড়িত নয়। এমনকি তার ওপর যে হামলার বর্ণনা দেয়া হয়েছে তা পুরোপুরি সঠিক নয়। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা দিয়েছেন। অথচ সেই নৌকার বিরোধিতা করছেন জহুরুল হক। ফলে সে কোন মাপের মুক্তিযোদ্ধা তা আপনারা ভেবে দেখুন। একজন মুক্তিযোদ্ধা যখন আদর্শচ্যুত হন, তখন তার কাছ থেকে এর চেয়ে আর কী আশা করা যায়। সংবাদ সম্মেলনে শিমুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হামিদ, আতিয়ার রহমান সরদার, আব্দুল আজিজ ও যুবলীগের আহ্বায়ক তরিকুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।