অদম্য মিন্টু

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ হাড়ের ক্যান্সারে এক পা হারানো চৌগাছার জহিরুল ইসলাম মিন্টু দুই চাকার মোটরসাইকেলকে তিন চাকায় রূপান্তরিত করে আয়ের মাধ্যম বানিয়েছেন। মোটরসাইকেলে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে প্রাইভেট পড়ানোর ফাঁকে ছুটির দিনে গ্রাম্য চিকিৎসকের প্রশিক্ষণও নিচ্ছেন তিনি। পঙ্গুত্বকে জয় করে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে পিতাকে সহায়তা করছেন।
উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের কিসমতখানপুর গ্রামের কৃষক জহর আলীর ছেলে জহিরুল ইসলাম মিন্টু। রাষ্ট্রবিঞ্জানে অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ার সময় ২০১৫ সালে বোন ক্যান্সার ধরা পড়ে। দেশে দীর্ঘ চিকিৎসায় তেমন কোনো উন্নতি না হওয়ায় যান ভারতের ভেলরে। দীর্ঘ তিন মাস চিকিৎসা শেষে ফিরে আসেন বাড়িতে। কিছু দিন পর আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। আবারও যান ভেলরে। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে চিকিৎসকরা জীবন বাঁচাতে তার শরীর থেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত ডান পা কোমরের নিচ থেকে কেটে বাদ দেন। সন্তানের চিকিৎসা বাবদ দীর্ঘ ৫ বছরে কমপক্ষে ২০ লাখ টাকা খরচ হয় কৃষক জহর আলীর।
মিন্টু জানান, ‘অভাবের সংসারে বাবাকে কিছুটা হলেও সহযোগিতার জন্য একটি তিন চাকার মোটরসাইকেল কিনেছি। সকালে নিজ গ্রামের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী আদমপুর, চাঁদপাড়া, গুয়াতলীসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে প্রাইভেট পড়াই। এখানে যা রোজগার হয় তার সবটাই বাবার হাতে তুলে দিয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাই। প্রাইভেট পড়ানোর পাশাপাশি শুক্রবার চৌগাছায় গ্রাম্য চিকিৎসকের একটি কোর্স করতে আসি। বলাচলে সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় আমি এখন ভাল আছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনার্স ৩য় বর্ষে পড়া অবস্থায় ক্যান্সারে আক্রান্ত হই, যে কারণে আর কোনো পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। এখন সুস্থ হয়ে উঠেছি, তাই বাকি পরীক্ষাগুলো যাতে সম্পন্ন করতে পারি তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছি, কিন্তু এখন কোনো ফল পাইনি। শিক্ষা জীবন শেষ করে একটি ভালো চাকরির সন্ধান করতাম, কিন্তু হবে কিনা জানি না।’