মনিরামপুরে বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবির পাশে ঝাড়ু রাখার ঘটনায় তদন্ত সম্পন্ন

0

স্টাফ রিপোর্টার, মনিরামপুর (যশোর) ॥ যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের কার্নিশে মুজিববর্ষের লগো সম্বলিত বঙ্গবন্ধুর ছবির পাশে একটি ঝাড়– রাখার ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ভিডিও চিত্রের বিষয়টি উদঘাটন করতে বৃহস্পতিবার তিন জন সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত করেন। তবে তদন্ত প্রতিবেদন এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে খালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান তদন্ত টিমের সদস্য উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হাসান, রফিকুল ইসলাম ও দেবব্রত রায়। এ সময় তাদেরকে দেখে সেখানে ভিড় করে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। কার্নিশে বঙ্গবন্ধুর ছবির পাশে ঝাড়– রাখার ভিডিও চিত্রের বিষয়ে বিদ্যালয়ের সামনের মুদি দোকানি শাহাজান আলী জানান, মাস খানেক আগে প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার ঘোষকে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে মোবাইল ফোন দিয়ে ভবনের একটি ছবি তুলতে দেখেন তিনি। তবে এই ছবি সেই ঝাড়–র ছবি কিনা তা তিনি জানেন না। হোসেন আলী নামে এক মৌসুমি ব্যবসায়ী জানান, শিক্ষকদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হয়। তার ধারণা, শিক্ষকদের বিরোধের জের হিসেবেই কাউকে ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে এই ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হতে পারে। গৃহবধূ সোলিনা খাতুন ও বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী আলতাফ হোসেন জানান, শত্রুতা করে কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে। ম্যানেজিং কমিটির সহসভাপতি শিরিনা খাতুন (নৈশপ্রহরী আলতাফ হোসেনের স্ত্রী) জানান, একজন ম্যাডাম (শিক্ষিকা) এর সাথে অধিকাংশ শিক্ষকের বিরোধ রয়েছে। তার ধারণা, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্র করে ঝাড়– রেখে ছবি তুলে ফেসবুকে দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার ঘোষ জানান, সুপরিকল্পিতভাবে কাউকে ফাঁসাতে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। এরপর তিন সদস্যের তদন্ত টিম শিক্ষকদের পৃথকভাবে জেরা করেন। এক পর্যায়ে তাদের বক্তব্য লিখিত আকারে নেওয়া হয়। তবে লিখিত বক্তব্য এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মূলত দু’জন শিক্ষকের পূর্ব বিরোধের জের হিসেবে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে বঙ্গবন্ধুর ছবির পাশে ঝাড়– রেখে ভিডিও চিত্র ধারণের পর তা ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে। পোস্টের পর বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে ১৪ অক্টোবর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (প্রাথমিক) সেহেলী ফেরদৌসকে নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক সেহেলী ফেরদৌস তিনজন সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি তদন্ত টিম গঠন করেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সেহেলী ফেরদৌস জানান, তদন্ত হয়েছে, কিন্তু প্রতিবেদন এখনও তার কাছে জমা হয়নি। তদন্ত টিমের সদস্য নাজমুল হাসান জানান, অতিশীঘ্রই প্রতিবেদন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পেশ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান জানান, প্রতিবেদন পাবার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুর ছবির পাশে ঝাড়– থাকার ভিডিও চিত্রটি যে আইডি থেকে পোস্ট করা হয়েছে সেই আইডির ওপর কালির প্রলেপ দিয়ে নাম অস্পষ্ট করা হয়।