গাছের বাধায় ঝুলে আছে চার স্কুলের উন্নয়ন কাজ

0

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা॥ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে গাছ।ভবন নির্মাণের নির্ধারিত স্থানে গাছগুলো থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করতে পারেনি। জানা যায়, এরই মধ্যে তিনটি কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। বাকি একটি কাজের আর মাত্র দুই মাস মেয়াদ আছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রহিম। উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্র জানায়, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মাজগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটা ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয়। দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি সম্পাদনের জন্য ২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর চুক্তিবদ্ধ হয় কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার আলামপুর এলাকার সৈকত এন্টার প্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর কাজ শুরু হয়ে চলতি বছরের ২৩ আগস্ট কাজটি শেষ করার কথা। কিন্তু ভবন নির্মাণের নির্ধারিত স্থানে বড় একটি বটের গাছ থাকায় মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শুরু করতে পারেননি ঠিকাদার। ফলে বিদ্যালয়ের এ উন্নয়নের কাজটি এখনো ঝুলে আছে।
অন্যদিকে, ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর পাথরবাড়িয়া ও শেখপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি নির্মাণ কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত স্থানের গাছ অপসারণ না হওয়ায় এখন নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। উপজেলার জংগলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অতিরিক্ত ক্লাসরুম উন্নয়নের অনুমোদন দেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। উন্নয়ন কাজের জন্য চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল দরপত্রের মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধ হয় কুষ্টিয়া থানাপাড়ার মেসার্স মুন কনস্ট্রাকশন। এ বছরের ২০ এপ্রিল কাজ শুরু হয়ে আগামী বছর ৪ জানুয়ারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ করার কথা। এ কাজের মেয়াদ বাকি আর মাত্র দুই মাস। কিন্তু এখানেও উন্নয়ন কাজের স্থানে গাছ থাকায় এখনো কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, বিদ্যালয়ের গাছ অপসারণ না হওয়ায় প্রায় ২ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ ঝুলে আছে। এরমধ্যে দুটি প্রকল্পের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু কাজ শুরু হয়নি। শিক্ষা অফিসকে বারবার তাগিদ দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। এ বিষয়ে মাজগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমান বলেন, বিদ্যালয়ে ৪১০ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। দুটি ভবন আছে। আরও একটি ভবন নির্মাণ হওয়ার কথা। কিন্তু গাছের কারণে কাজ শুরু হয়নি। বিদ্যালয়ের জমি সঙ্কট থাকায় গাছ কাটা ছাড়া ভবন নির্মাণ সম্ভব নয়। একটি বটগাছ ও দুটি মেহগনি গাছ বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার শরিফুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের গাছ কর্তনের নির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। বেশ কিছু প্রসেসিংও আছে। আমরা নিয়ম মেনে গাছ কর্তনের ব্যবস্থার জন্য চেষ্টা করছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল বলেন, গাছের জন্য উন্নয়ন কাজ ঝুলে আছে, এমন বিষয় আমার জানা নেই। শিক্ষা অফিস কিছু জানায়নি। তবে খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি দেখা হবে।