খুলনায় ক্রেতার নাগালে মাছ, দাম বেড়েছে পেঁয়াজ-কাঁচা মরিচ-সয়াবিনের

0

খুলনা সংবাদদাতা॥ খুলনায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে ভোজ্য তেলের দাম প্রতি কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে। বাজারে দেশী কাঁচা মরিচের সংকট থাকায় কদর বেড়েছে বরজ ঝালের। তবে কমেছে সব ধরনের মাছের দাম। নগরীর কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে জানা যায়, প্রতি কেজি পেঁয়াজের খুচরা মূল্য নেওয়া হচ্ছে ৮০ টাকা। যা গত চার দিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৪৫ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩৮ টাকা। আর বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটারে বেড়েছে পাঁচ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকায়।
খুলনার সোনাডাঙ্গার ট্রাক টার্মিনালের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ও জাকারিয়া বাণিজ্য ভাণ্ডারের মালিক মো. চাঁন মিয়া এবং মেসার্স বাণিজ্য ভাণ্ডারের মালিক আব্দুল মালেক জানান, ভারতে পেঁয়াজের বাজার দর বাড়ায় দেশে এ পণ্যটির দাম বেড়েছে। বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩৭-৩৮ টাকায়। যেহেতু পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানির ওপর নির্ভরশীল একটি পণ্য তাই অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ মজুদ করে দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা আরও জানান, দেশে এবার পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকদের কাছে যে পরিমাণ পেঁয়াজের মজুদ আছে তা দিয়ে আগামী চার মাস ভারতীয় পেঁয়াজ ছাড়াও দেশের মানুষের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব। আড়তে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা না করে পেঁয়াজের মোকামগুলোতে অভিযান চালানোর দাবি জানান তারা। জানা যায়, গত বছরের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি পায়। তারপর থেকে দফায় দফায় বাড়তে থাকে তেলের দাম। বড় বাজারের তেল ব্যবসায়ী রুহুল আমিন জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি খোলা তেল ও বোতলজাত তেলে পাঁচ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। আর তেল কোম্পানি থেকে জানানে হচ্ছে আগামী সপ্তাহ থেকে তেলের দাম আরও পাঁচ টাকা করে বাড়ানো হবে। খুচরা বাজারে এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে বলে জানান তিনি। রূপসা বাজারের তেল ব্যবসায়ী মো. লিটন হাসান জানান, এক লিটারের প্রতিটি তেলের বোতলে পাঁচ টাকা ও পাঁচ লিটারের প্রতিটি বোতলে ২০ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে।
এছাড়া, বাজারে দেশী কাঁচা মরিচের সংকট থাকায় এলসি মরিচের ছড়াছড়ি। এলসির এ পণ্যটি উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে এ পণ্যটি মানভেদে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ট্রাক টার্মিনালের কাঁচা মরিচ ব্যবসায়ী ও যমুনা বাণিজ্য ভাণ্ডারের মলিক মো. রবিউল ইসলাম জানান, প্রতি কেজি ভারতীয় কাঁচা মরিচে শুল্ক কর দিতে হয় ২৯ টাকা। যেখানে আগে দিতে হতো ২০ টাকা। আর কাঁচা মরিচ ভারত থেকে কিনতে হয় ৩০ টাকায়। সঙ্গে রয়েছে পরিবহন খরচ। সব মিলিয়ে কম দামে বিক্রি করলে ব্যবসায়ীদের লোকসান হবে। অপরদিকে মিস্ত্রিপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া জানান, বাজারে দেশী মরিচ না থাকায় বরজ ঝালের কদর বেড়েছে। প্রতি কেজি বরজ মরিচ এখন ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা আগে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
তবে কিছুটা হলেও ক্রেতাদের স্বস্তি মিলছে মাছের বাজারে। সব মাছের দাম ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার নাগালের মধ্যেই রয়েছে। বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া চিংড়ি মাছ এখন ৩০০-৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রুই মাছ ১২০-২৫০ টাকা, ভেটকি ৪০০ টাকা, বেলে সাইজ ভেদে ৩০০-৫০০ টাকা, পাবদা ২০০-৩৫০ টাকা, দাঁতনে ২৫০ টাকা, টেংরা ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নগরীর টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের মাছ বিক্রেতা বাদশা, মিন্টু, মালেক, রহিমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মাছের দাম চড়া থাকলেও এখন কিছুটা কম হয়েছে। তাই মাছের বিক্রিও বেড়েছে। শীতের আগমনে দাম কমতির দিকে বলেও জানান তারা।