পানগুছির ভাঙনে বদলাচ্ছে মোরেলগঞ্জের মানচিত্র

0

শামীম আহসান মল্লিক, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) ॥ পানগুছি নদীর অব্যাহত ভাঙনে বদলে যাচ্ছে মোরেলগঞ্জের মানচিত্র। প্রতিদিনই ভাঙছে নতুন নতুন এলাকা। ইতোমধ্যে বসতবাড়িসহ বহু প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট চলে গেছে নদীগর্ভে। গত ৫০ বছরে পানগুছি নদীর আয়তন বেড়েছে তিনগুণ। এক কিলোমিটারের বেশি এখন নদীটির প্রশস্ততা। এরই তীরে উপজেলার ৩ লাখ লোকের বসতি। দেশ স্বাধীনের আগে থেকেই এই নদীর তীরে বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে, যার পোল্ডার নং ৩৫/২। কিন্তু দীর্ঘ ৫০ বছরেও সেই স্বপ্নের বেড়িবাঁধের দেখা মেলেনি। বিভিন্ন সময় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী আন্দোলন, মানববন্ধন করেছেন। মন্ত্রী, এমপি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা পরিদর্শনও করেছেন বহুবার। বেড়িবাঁধের দাবিতে ডিও লেটারসহ দৌঁড়ঝাপও করেছেন তারা। কিন্তু এখনো দৃশ্যমান কোনো কিছুই দেখতে পারেননি এলাকাবাসী।
গত ৫০ বছরে শুধু উপজেলা সদর থেকে নদীগর্ভে চলে গেছে, খাদ্যগুদাম, সাবরেজিস্ট্রি অফিস, টেলিফোন অফিস, আব্দুল আজিজ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এসিলাহা উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ভবন, ডাকবাংলো, বারইখালী ইউনিয়ন পরিষদ, পুলিশ কোয়ার্টার, আনছার ময়দান, বারইখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পোস্ট অফিস, স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের অফিস, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, থানা জামে মসজিদ, সার্বজনীন হরিসভা মন্দির, শ্মশান ঘাটসহ বহু প্রতিষ্ঠান ও রাস্তা ঘাট। বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে গাবতলা, কাঁঠালতলা, বারইখালী, ফেরিঘাট, কুমারখালী, সন্নাসী, শ্রেণিখালী, ঘষিয়াখালী, সোনাখালী, ফুলহাতাসহ ২০টি গ্রাম। কয়েক বছর ধরে পানগুছি নদীর ভাঙনে শুধু মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৩টি গ্রামের কমপক্ষে ৪শ পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছে। গাবতলা গ্রামের ২৫একর জমি ধসে গেছে নদীতে। সিডর, আইলা, ইয়াসের পরও ভেঙে যাওয়া বাঁধ স্থায়ীভাবে রক্ষার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে স্থানীয় সংদস্য সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেন ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। ওই সময় তিনি গাবতলা হতে পশুরবুনিয়া অভিমুখে আড়াই কিলোমিটার বেড়িবাঁধের জন্য ডিও লেটার দেন। ডিও লেটারে বলা হয়েছে, ‘স্বাধীনতার আগে বেড়িবাঁধ নির্মাণের লক্ষে পোল্ডার নং-৩৫/২ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল যা অদ্যাবধি বাস্তবায়িত হয়নি’। ডিও লেটারের ভিত্তিতে পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম গত বছরের ১২ জুলাই পাউবো মহাপরিচলকেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।