ঝিনাইদহের সাগান্না ইউনিয়নে ৭ জনের ভাতার টাকা নগদ থেকে গায়েব!

0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ॥ ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়নের বাথপুকুরিয়া গ্রামের একাধিক জনের বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা নগদ একাউন্ট থেকে তুলে গায়েব হয়েছে। টাকা উদ্ধারের দাবিতে ক্ষতিগ্রস্তরা শনিবার ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পেয়েছে। তবে এমন ঘটনা শুধু এ্ ইউনিয়নের নয়, জেলায় হাজারের অধিক বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহকরা নগদ থেকে টাকা ওঠাতে পারেননি।
সাগান্না ইউনিয়নে ভাতাভোগীদের অভিযোগ পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল ওহাবের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রাজন নামে এক কলেজ ছাত্র এই টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন। ডাকবাংলা বাজারের নগদ এর এজেন্ট হবিবুর রহমানও স্বীকার করেছেন রাজন মাঝে মধ্যে এসে ভাতাভোগীদের টাকা উঠিয়ে নিয়ে যায়। উপজেলার ডাকবাংলা পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মাখন বিশ্বাস জানান, ভাতাভোগী নুরুল ইসলাম, ফেরদৌসি খাতুন, নুর আলম ও বাবুল হোসেন ভাতার টাকা না পেয়ে থানায় অভিযোগ করেন। বিষয়টি তিনি সরেজমিন তদন্ত করে দেখেছেন বাথপুকুরিয়া গ্রামের ৭ জন বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী তাদের ভাতার টাকা পাননি। বিষয়টি প্রযুক্তিগত ও জটিল হওয়ায় তিনি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে শনিবার ভুক্তভোগীদের বক্তব্য শোনেন। ভাতাভোগীরা ইউপি মেম্বারের সহযোগী বাথপুকুরিয়া গ্রামের শাহিন মিয়ার ছেলে রাজনকে অভিযুক্ত করে বক্তব্য দেন।
প্রতিবন্ধী ফেরদৌসি খাতুন অভিযোগ করেন, রাজন তাদের বই ও সিমসহ মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে একাউন্টে কোনো টাকা নেই। টাকা তুলে দেওয়ার কথা বলে দুই’শ টাকাও নেয় রাজন। একই কথা জানান, বাথপুকুরিয়া গ্রামের বিধবা শামারুপ নেছা, একই গ্রামের আছিয়া বেগম, আমেনা খাতুন, প্রতিবন্ধী নুর আলম ও বাবুল। তাদের মতে কলেজ ছাত্র রাজন এই টাকা তুলে সে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনেছে। আব্দুল খালেক নামে এক প্রতিবন্ধীর পিতা জানান, ব্যাংক থেকে যখন টাকা প্রদান করা হতো তখন তাদের কোনো টাকা খোয়া যায়নি। মোবাইল ব্যাংকিং চালু হওয়ার পর তাদের এলাকার বহু মানুষের ভাতা নগদ একাউন্ট থেকে হাওয়া হয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে কলেজ ছাত্র রাজন জানান, তিনি কারো টাকা উত্তোলন করেন নি। সামনে নির্বাচন, তাই প্রতিপক্ষরা তার উপর মিথ্যা দায় চাপাচ্ছে। ওয়ার্ডর মেম্বার আব্দুল ওহাব বলেন, আসন্ন নির্বাচন নিয়ে দলাদলির কারণে এ ধরণের মিথ্যা অভিযোগ থানায় দেওয়া হয়েছে। দেশের অন্যান্য স্থানের মতো তার ওয়ার্ডেও নগদ একাউন্ট হ্যাক করে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মাখন বিশ্বাস জানান, তারা যে টাকা পায়নি এটা সত্য। এই টাকা কীভাবে তুলে নেওয়া হয়েছে তা বিষদ তদন্তের মাধ্যমে জানা যাবে।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ জানান, এরকম অভিযোগ বহু রয়েছে। আমরা অধিদফতরে জানিয়েছি যদিও এখনো কারো প্রতিকার করতে সকাষম হইনি। তিনি জানান, ঝিনাইদহ থেকে ঠিক কত জনের টাকা নগদ একাউন্ট হ্যাক করে তুলে নেওয়া হয়েছে তার সঠিক হিসেব নেই। তবে আমরা প্রাথমিক ভাবে এক হাজার ভাতাভোগীকে সনাক্ত করতে পেরেছি। তাদের তালিকা সমাজসেবা অধিদফতরকে দিয়েছি।