কমছে করোনা আক্রান্তের সংখ‌্যা, বাড়ছে ডেঙ্গু

0

বিশেষ সংবাদদাতা॥ করোনাভাইরাসে সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সংখ্যা গত ৯৯ দিনে সর্বনিম্ন। এর আগে গত ৭ জুন ৩০ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে দেশে সর্বমোট মৃতের সংখ্যা ২৭ হাজার ৭ জন। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৭৪ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪০ জন। পরদিকে, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দুই সিটি করপোরেশনের কোনো অভিযানই কাজে আসছে না। গত তিন দিনে নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় এক হাজার। যাদের বেশির ভাগই শিশু।
এদিকে, ডেঙ্গু আক্রান্তদের জন্য নির্ধারিত হাসপাতালের সক্ষমতা না থাকায় রোগীর চাপ বাড়ছে শিশু হাসপাতালে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলতি মাসেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আশার সম্ভাবনা নেই। হাসপাতালগুলোর গত কয়েক মাসের চিত্র এমনই। প্রতিদিন ঢাকা শিশু হাসপাতালেই ভর্তি হচ্ছে ১০-১৫ জন। বর্তমানে এই হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসা নিচ্ছে ৬৭ শিশু। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য নির্ধারিত ছয়টি হাসপাতালের মধ্যে রোগীর চাপ সবচেয়ে বেশি মিটফোর্ড হাসপাতালে। এরপরই রয়েছে ঢাকা শিশু হাসপাতাল। চিকিৎসরা বলছেন, অন্য হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা না থাকায় এখানে চাপ বাড়ছে। মিরপুর শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. ফরহাদ মনজুর বলেন, ‘১০ জনের অধিক শিশু প্রতিদিনই এখানে ভর্তি হচ্ছে। শিশুদের জ্বরটা যদি প্রচণ্ড আকারে হয়, মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা ও বমি হয়, তাহলে অবশ্যই হাসপাতালে আনতে হবে আর ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে হবে। চলমান এই ডেঙ্গু পরিস্থিতি চলতি মাসেও নিয়ন্ত্রণে আসার সম্ভাবনা নেই।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, ‘বৃষ্টিপাত যতদিন পর্যন্ত না থামছে। ততদিন পর্যন্ত ডেঙ্গু প্রজনন কমবে না। জনগণকে সচেতন হতে হবে। এ মাসেও ডেঙ্গুর প্রকোপ তেমন কমবে বলে মনে হচ্ছে না।’ চলতি মৌসুমে সারা দেশে ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ হলো, প্রচণ্ড জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা, বমি, শরীরে লাল র‍্যাশ ওঠা, মাংসপেশীতে ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা ইত্যাদি। ডেঙ্গু প্রতিরোধে ডেঙ্গু থেকে বাঁচার জন্য আমাদের করণীয় : মশার প্রজনন স্থল ধ্বংস করা, বাসা ও আশপাশের যে কোনো পাত্রে বা জায়গায় জমে থাকা পানি নিয়মিত পরিষ্কার করা, ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, বালতি, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা, নারকেলের মালা, কনটেইনার, মটকা, ব্যাটারি সেল ইত্যাদি প্রতিনিয়ত পরিষ্কার করা; যেন এডিস মশা বিস্তার না করতে পারে। এ ছাড়াও রাতে বা দিনে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ স্থাপন করা, মশা নিধনের ওষুধ, স্প্রে কিংবা কয়েল ব্যবহার করা, জানালায় মশা প্রতিরোধক নেট ব্যবহার করা ইত্যাদি।