নারী পাচার রুখতে হবে

0

নারীপাচারে এবার নতুন কৌশল উদ্ঘাটন হয়েছে। পাচারকারীরা মহিলাদের ধর্মীয় অনুভূতি কাজে লাগাচ্ছে। তাদের সর্বশেষ কৌশলটি নজরে এসেছে। সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, তাদের সর্বশেষ এ কৌশলটি নজরে এসেছে। সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, বিভিন্ন মানত বা উদ্দেশ্য নিয়ে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও বিভিন্ন মাজারে যান। আর সেখানেই পাচারকারীদের শিকারে পরিণত হন তাঁরা। মাজারগুলোতে পাচারকারীচক্রের এজেন্টরা নানা বেশে ওত পেতে থাকে। কম বয়সী সরল-সহজ মেয়েদের দেখলেই তারা প্রথমে আলাপ জমায়। এক পর্যায়ে তাদের প্রলুব্ধ করে ভারতের আজমীর শরিফে বা অন্য কোথাও ভালো বেতনে চাকরি দেয়ার কথা বলে। অনেকেই তাদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। পরে পাচারকারীরা তাদের ভারতে নিয়ে বিভিন্ন পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়। সম্প্রতি এভাবে পাচার হওয়া দুই নারী ভারতীয় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে দেশে ফিরে পাচারের এই নতুন কৌশলের কথা জানিয়েছে।
ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দিয়ে বিদেশে পাচার সবচেয়ে পুরনো কৌশলগুলোর একটি, সেটি এখনো চালু আছে। কিছুদিন আগে প্রকাশ পায় টিকটক ও লাইকির মতো বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে তৈরি করা নাটক, সিনেমায় অভিনয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রথমে তরুণীদের আকৃষ্ট করা; পরে শুটিংয়ের কথা বলে তাদের ভারতসহ বিভিন্ন দেশে নিয়ে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেওয়া কিংবা যৌন ব্যবসায় নিয়োজিত করা। এভাবে পাচারের অভিযোগে সম্প্রতি ‘টিকটক বাবু’সহ বেশ কয়েকজন ধরা পড়েছে। পাচারকারীরা পাচারের কাজে নিত্যনতুন কৌশল ব্যবহার করে। মাজারকে কেন্দ্র করে পাচারের ফাঁদ পাতার কৌশলটি তেমনই একটি কৌশল। এমন আরো কী কী কৌশল তারা অবলম্বন করছে, সেগুলো জানতে হবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশ অনেক দিন থেকেই মানবপাচারের অন্যতম টার্গেট। দেশি-বিদেশি পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে বহু বাংলাদেশির ঠাঁই হয়েছে থাইল্যান্ডের জঙ্গলে থাকা গণকবরে। অনেকের মৃত্যু হয়েছে সাগরে ডুবে। নারী ও শিশু পাচারের দিক থেকেও বাংলাদেশ পেছনে নয়। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের তথ্য রয়েছে। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে বছরে ২০ হাজার এবং অন্য একটি রিপোর্ট অনুযায়ী বছরে ৫০ হাজার নারী ও শিশু পাচার হয়। একটি স্বাধীন দেশের জন্য এটি খুবই লজ্জাকর। পাচার রোধে বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে আছে কঠোর আইন প্রণয়ন, দ্রুততম সময়ে বিচার সম্পন্ন করার জন্য বেশ কিছু ট্রাইব্যুনাল গঠন, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পাচারবিরোধী কর্মকাণ্ডে শরিক হওয়া, বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সঙ্গে নিয়ে দেশে পাচারবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা, যারা পাচারের শিকার তাদের সহযোগিতা দেওয়াসহ আরো কিছু উদ্যোগ। এসব উদ্যোগের কারণে আন্তর্জাতিক পাচারবিরোধী অবস্থানে বাংলাদেশের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আমরা চাই, নারী পাচার নির্মূল হোক।