জামায়াত সেক্রেটারিসহ ৯ জন ৪ দিনের রিমান্ডে

0

লোকসমমাজ ডেস্ক॥ রাজধানীর ভাটারা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে হওয়া মামলায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ ৯ জনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তার তাদের প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া অন্য আসামিরা হলেন- জামায়াতে ইসলামীর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ, রফিকুল ইসলাম খান, নির্বাহী পরিষদ সদস্য ইজ্জত উল্লাহ, মোবারক হোসেন, আব্দুর রব, ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত, জামায়াতের কর্মী মনিরুল ইসলাম ও আব্দুল কালাম। এর আগে সোমবার রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাদের আটক করে পুলিশ। পরে রাতে ভাটারা থানায় তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে অনেককে।
এদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে পুলিশ রিমান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। রিমান্ড বাতিল করে তাদেরকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ জামায়াত নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। সরকার পক্ষ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানালে। আদালত চারদিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। শুধুমাত্র রাজনৈতিকভাবে হয়রানির জন্যই তাদেরকে গ্রেফতার ও রিমান্ড দেয়া হয়েছে। আমরা সরকারের এই আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ গ্রেফতারকৃত জামায়াতের সকল নেতৃবৃন্দের রিমান্ড বাতিল করে নিঃশর্ত মুক্তির জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
শ্রমিক কল্যাণের তীব্র নিন্দা ও নিঃশর্ত মুক্তি দাবি: রাজধানী ঢাকা থেকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ ১০ জন নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সংগঠনটি। বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, সরকার মানুষের রাজনৈতিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত করে ক্ষমতার মসনদ চিরস্থায়ী করতে চাইছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের কণ্ঠস্বর থামিয়ে দিতে তাদেরকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ সকল রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের সংবিধান প্রতিটি নাগরিককে ভিন্ন ভিন্ন দল করার অধিকার দিয়েছে। গণতন্ত্র ও দেশের স্বার্থে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আমরা আশঙ্কার সাথে লক্ষ্য করছি সরকার এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েমের জন্য বিরোধী মতের দমনে উঠে পড়ে লেগেছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য এটি ভালো লক্ষণ নয়। সুস্থ গণতন্ত্রের স্বার্থে সকল নাগরিক ও দলকে তাদের স্ব স্ব রাজনৈতিক চর্চা ও বাক স্বাধীনতা প্রদান করতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, রাজনৈতিক বন্দিদের কারাগারে রেখে দেশের উন্নয়ন হতে পারে না। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সকল দল মতের নাগরিকদের নিয়ে আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর চলমান পুলিশি হয়রানি ও মিথ্যা বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সকল রাজবন্দীদের মুক্তি দিতে আমরা সরকারের প্রতি আবারো আহ্বান জানাচ্ছি।