ঝগড়ার পর মীমাংসা, আধাঘণ্টার ব্যবধানে বউ-শাশুড়ির মরদেহ উদ্ধার

0

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা॥ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নে আধাঘণ্টার ব্যবধানে পুত্রবধূ ও শাশুড়ির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ওই বাড়ি থেকে একটি চিরকুটও উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃতরা হলেন- বসির উদ্দিনের স্ত্রী রোকেয়া খাতুন (৬০) এবং তার ছেলের স্ত্রী হিরা খাতুন ওরফে জোসনা (২৬)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাশুড়ি রোকেয়া ও পুত্রবধূ জোসনার মধ্যে পারিবারিক কলহের জেরে গত তিনদিন দুজনের মধ্যে কথা বলা বন্ধ ছিল। এমনকি তারা দুজনই তিনদিন ধরে না খেয়ে ছিলেন। একপর্যায়ে পুত্রবধূ জোসনা অসুস্থ হয়ে পড়লে বাড়িতে পল্লীচিকিৎসক এনে তাকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়। এ অবস্থায় শুক্রবার রাতে ছেলে আব্দুর রহমান তার মা রোকেয়া খাতুন ও স্ত্রী জোসনাকে অনুরোধ করে দুজনের মধ্যে মীমাংসা করিয়ে দেন। ওইদিন দিনগত রাত ২টার দিকে রহমান তার মা রোকেয়াকে বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরের আঁড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা নামিয়ে দেখেন তিনি মারা গেছেন। শাশুড়ির আত্মহননের আধাঘণ্টার মাথায় আব্দুর রহমানের স্ত্রী জোসনারও নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। স্বজনদের অভিযোগ, জোসনার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাদের দাবি, জোসনাকে হত্যা করা হয়েছে। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাকিব হাসান বলেন, খবর পেয়ে শনিবার শাশুড়ি ও পুত্রবধূর মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়। পরে মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়া ছাড়া হিরা খাতুনের মৃত্যুর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না। রাকিব হাসান আরও বলেন, ওই বাড়ি থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, চিরকুটটি আব্দুর রহমানের স্ত্রী হিরা খাতুনের। ওই চিরকুটে লেখা, ‘মুক্ত করে দিলাম, তুমি তোমার মাকে নিয়েই থাক।’ পুলিশের এই তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে আগে শাশুড়ি আত্মহত্যা করেছেন। এর আধাঘণ্টা পর পুত্রবধূর মরদেহ পাওয়া যায়। কিন্তু চিরকুটের ভাষ্য অনুযায়ী শাশুড়ির আগেই পুত্রবধূর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেনি।