বাগেরহাটে মৃত সন্তান প্রসবের অপরাধে গৃহবধূকে মারধর, হাসপাতালে ভর্তি

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা॥ বাগেরহাটের রামপালে মৃত সন্তান প্রসবের অপরাধে ঝর্ণা বেগম (৩৭) নামের এক গৃহবধূকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী ও বড় সতীনের বিরুদ্ধে। স্বামী-সতীনের মারধরে আহত ওই গৃহবধূ চার দিন ধরে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন । তবে এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন রামপাল থানা পুলিশ।
ঝর্ণার পরিবার সূত্রে জানা যায়, রামপাল উপজেলার কুমলাই গ্রামের গোলাম মোস্তফার মেয়ে ঝর্ণার সাথে ২০২০ সালের ৩ জুলাই পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই গ্রামের তৈয়ব ফকিরের ছেলে ব্যবসায়ী হান্নান ফকিরের। হান্না ফকিরের প্রথম বউয়ের কোনো সন্তান না হওয়ায় ঝর্ণাকে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পরে ঝর্ণা সন্তানসম্ভবা হন। কিন্তু ঝর্ণার সন্তান গর্ভেই মারা যায়। ২০২১ সালের ৭ মার্চ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিজার করে মৃত সন্তান অপসারণ করা হয়। মৃত সন্তানের শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই স্ত্রীকে দেন মোহরের টাকা দিয়ে তালাকের ঘোষণা দেন হান্নান ফকির। তারপরও সমস্ত নির্যাতন সহ্য করে স্বামীর বাড়িতেই ছিলেন ঝর্ণা। এইদকে হান্নান ও তার বড় বউয়ের অত্যাচার বন্ধ হয়নি। সর্বশেষ ১০ আগস্ট সকালে বড় বউকে সাথে নিয়ে হান্নান ফকির ঝর্ণাকে বেদম মারধর করেন। এতে গুরুতর আহত হন ঝর্ণা বেগম। পরে তাকে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি করা হয়। এর কয়েকদিন আগেও একই ভাবে ঝর্ণাকে মারধর করেন হান্নান ও তার বড় স্ত্রী। তখনও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে চিকিৎসা নিয়েছিলেন ঝর্ণা বেগম। আহত ঝর্ণা বেগম বলেন, আমার কোনো অপরাধ নেই, গর্ভের সন্তান মরে যাওয়াটাই আমার অপরাধ। সন্তান মারা যাওয়ার আগে সে আমার সাথে ভাল ব্যবহার করত। কথায় কথা আমার স্বামী আমাকে বলে, তোকে আমি রাখব না, তুই চলে যা। আমি আবার বিয়ে করব। কাবিনের ৫০ হাজার টাকা নিয়ে তুই আমার বাড়ি থেকে বিদায় হ। ঝর্ণার ভাই রাসেল গোলদার বলেন, সতীনের সংসার হলেও বিয়ের পরে ভালই ছিল আমার বোন। বোন জামাইয়ের ব্যবসার জন্য আমরা বিভিন্ন সময় লক্ষাধিক টাকাও দিয়েছি। বোনের গর্ভে সন্তান মারা যাওয়ার পরেই বোন জামাই হান্নান আমার বোনের উপর অত্যাচার শুরু করে। আমরা এর বিচার চাই। ঝর্ণার বৃদ্ধ বাবা গোলাম মোস্তফাও মেয়ের উপর নির্যাতনের বিচার চান। এ দিকে হান্নান ফকির ঝর্ণার দেওয়া সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সামছউদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে এখনও থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।