টিকার জন্য সারারাত লাইনে থাকার ঘটনা লজ্জার : জিএম কাদের

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ‘এক ডোজ টিকার আশায় সারারাত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার ঘটনাকে নজিরবিহীন’ উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, ‘টিকার জন্য সারারাত শতশত নারী-পুরুষ লাইনে রাত কাটানোর ঘটনা লজ্জাজনক।’ বুধবার (১১ আগস্ট) দুপুরে জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে প্রয়াত নেতাকর্মীদের স্মরণ সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে জিএম কাদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘গণটিকা কর্মসূচি সফল করে সারাবিশ্ব যখন সব কিছু স্বাভাবিক করে ফেলছে, তখন আমাদের দেশে শতশত মানুষ এক ডোজ টিকার জন্য সারারাত লাইনে কাটিয়েছেন। বিশেষ করে বয়োবৃদ্ধরা সীমাহীন ভোগান্তিতে রাত কাটিয়েছেন শুধু এক ডোজ করোনা টিকা পাওয়ার আশায়। কারণ, গেল কয়েকদিন তারা বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরেও টিকা পাননি। জাতির জন্য এর চেয়ে লজ্জাজনক সংবাদ আর হতে পারে না।’
জিএম কাদের বলেন, ‘টিকার জন্য নারী-পুরুষ লাইনে বসে রাত কাটানোর ঘটনা মূল্যায়ন করলেই প্রমাণ হবে গণটিকা কার্যক্রম কতটা ব্যর্থ। গণটিকা কর্মসূচি সফল করতে অন্তত ২৭ কোটি ডোজ টিকার প্রয়োজন, দেশের মানুষকে বাঁচাতে দ্রুততার সঙ্গে বিভিন্ন সোর্স থেকে টিকা সংগ্রহ করতে হবে।’ টিকা নিয়ে একেক মন্ত্রী একেক ধরনের কথা বলছেন জানিয়ে তিনি বলেন, মন্ত্রীদের কথা এখন আর মানুষ জানতে চায় না। তাদের বক্তব্যে দেশের মানুষ সরকারের ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। বাস্তবতা হলো- সরকার যা করতে বলছেন দেশের মানুষ এখন আর তা করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষিতে জীবন বাঁচাতে চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। উপজেলা এমনকি জেলা পর্যায়ে মুমূর্ষু রোগী প্রায়ই অক্সিজেন সহায়তা পাচ্ছে না। এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা আর হতে পারে না। সে কারণে সংক্রমণ প্রবণ এলাকায় সেনাবাহিনীর সহায়তায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদিসহ দ্রুত ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।’ জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বিপদের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু। তাই করোনাকালে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে থাকাই জাতীয় পার্টির রাজনীতি। তিনি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ প্রয়াত নেতাকর্মীদের মাগফিরাত কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। দলটির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, করোনার চিকিৎসা নিয়ে সরকার অনেক বড় বড় কথা বলেছেন, অনেক আস্ফালন করেছেন। বলেছেন- আমরা নাকি করোনার চেয়েও শক্তিশালী। অথচ, চিকিৎসা নিতে গিয়ে দেশের মানুষ পথে-ঘাটে-গাড়িতে ও অ্যাম্বুলেন্সে মারা যাচ্ছে। কিন্তু দেশের মানুষ করোনার চিকিৎসা পায়নি। গ্রাম-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা কিন্তু চিকিৎসা নেই। প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। অনুষ্ঠানে কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ইতিহাস থেকে অনেক রাজনৈতিক দল হারিয়ে গেছে। কিন্তু দেশের মানুষের ভালোবাসায় জাতীয় পার্টি এখনো বেঁচে আছে। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আদর্শের জাতীয় পার্টিকে আগামী দিনে আরও শক্তিশালী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। জাতীয় পার্টি গণমানুষের সঙ্গে ছিল, আগামী দিনেও সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবেই মাঠে থাকবে তারা। অনুষ্ঠানের কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, প্রেসিডিয়াম সদস্য এমরান হোসেন মিয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ড. নুরুল আজহার শামীম, আবু বক্কর, হেনা খান পন্নি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।