আশঙ্কাই সত্যি হল! বিজ্ঞাপনের স্বার্থে এবার WhatsApp চ্যাটে নজর রাখবে Facebook

    0

    লোকসমাজ ডেস্ক॥ WhatsApp এর অন্যতম জনপ্রিয় ফিচার এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন। এর ফলে যে ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠানো হচ্ছে, শুধুমাত্র তিনি ছাড়া দ্বিতীয় আর কেউই মেসেজ পড়তে পারবেন না। এর অর্থ এই মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কোন মেসেজ WhatsApp ও পড়তে পারে না। আর এই কারণেই অনেকে নিশ্চিন্তে WhatsApp এর মাধ্যমে কথোপকথন চালিয়ে যান।
    যেহেতু, hatsApp এর কোনও চ্যাট পড়া সম্ভব নয়, তাই এই মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে টর্গেটেড অ্যাড দেখানোও প্রায় অসম্ভব। কিন্তু, Facebook এর প্রধান আয় বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমেই হয়। তাই, এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা অনেক দিন ধরেই করে আসছে মার্কিন সোশ্যাল কোম্পানিটি। এবার এই সমস্যার সমাধানে একটি বিশেষ দলকে কাজে লাগিয়েছে WhatsApp। কী ভাবে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন বজায় রেখেও WhatsApp-এ বিজ্ঞাপন দেখানো সম্ভব হয়, সেই বিষয়ে গবেষণা করবে এই দল। সম্প্রতি, প্রকাশিত এক রিপোর্টে এমনই তথ্য সামনে এসেছে।
    রিপোর্টে জানা গিয়েছে, মেসেজ ডিক্রিপ্ট না করেই তা বোঝার চেষ্টা শুরু করেছে Facebook। এই পদ্ধতির নাম হোমোমর্ফিক এনক্রিপশন। এই উপায়ে গ্রাহকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা খর্ব না করেই বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা যাবে।
    যদিও, কী ভাবে এই কাজ সম্ভব, তা এখনও পরিষ্কার না। তবে, গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য বুঝে সেই অনুযায়ী বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্যই এই গবেষণা শুরু করেছে Facebook। তবে, এই রিপোর্টের সত্যতা অস্বীকার করেছে Facebook। কোম্পানির তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, ‘WhatsApp এর মাধ্যমে হোমোমর্ফিক এনক্রিপশন ব্যবহার করার হবে কি না, তা বলার সময় এখনও আসেনি।’
    বিগত কয়েক মাস ধরেই Facebook কেন্দ্র করে একের পর এক সমস্যার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। সম্প্রতি, iPhone এর প্রাইভেসি নিয়ে Apple এর সঙ্গে সম্মুখ সমরে নেমেছে মার্ক জ়াকারবার্গের কোম্পানি। iOS 14-এ সব অ্যাপ থেকে অ্যাড ট্র্যাকিং ফিচার বন্ধ করে দিয়েছে Apple। এর ফলে Facebook এর ব্যবসায় ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, ট্র্যাকিং বন্ধ হলে বিজ্ঞাপন দেখাতে সমস্যা হবে Facebook এর।
    এর আগে প্রাইভেসি পলিসি বদল করা নিয়ে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল WhatsApp। নতুন প্রাইভেসি পলিসি নিয়ে আসার খবর সামনে আসার পরেই ক্ষোভে ফেটে পরেন গ্রাহকরা। অনেকেই ফোন থেকে WhatsApp ডিলিট করে Telegram, Signal এর মতো মেসেজিং সার্ভিস ব্যবহার শুরু করেন। গ্রাহকের বিপুল ক্ষোভের সামনে সিদ্ধান্ত বদল করতে একপ্রকার বাধ্য হয় WhatsApp। এর পরে একাধিকবার পিছিয়েছে নতুন প্রাইভেসি পলিসি লাগু করার দিন।
    এই সব দিন বিচার করলে আপনার কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে Facebook এর আসল লক্ষ্য কী, তা বোঝা। WhatsApp এর মধ্যে চলতে থাকা বিপুল পরিমাণ ডেটা থেকে রোজগারের উপায় খুঁজে চলেছে Facebook। কিন্তু, মেসেজিং সার্ভিসের এনক্রিপশনের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। অবশেষে হোমোমর্ফিক এনক্রিপশন ব্যবহার করে, বিগত কয়েক বছর ধরে চলতে থাকা এই সমস্যার সমাধান খুঁজে পেতে চাইছে Facebook।
    যদিও, বিজ্ঞাপনের জন্য WhatsApp থেকে তথ্য সংগ্রহ শুরু হলে কত গ্রাহক এই মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করবেন, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। ইতিমধ্যেই বহু মানুষের মধ্যে Telegram ও Signal এর মতো মেসেজিং সার্ভিস ব্যবহারের প্রবণতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, প্রাইভেসি পলিসি বিতর্কের পরে বহু মানুষ এই দুই মেসেজিং অ্যাপ বিকল্প হিসেবে ইনস্টল করেছেন। এর পরে এনক্রিপটেড মেসেজ বিশ্লেষণ শুরু হলে গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে পারে।