বাজারে দাম বাড়ছে সবজির ইলিশের কেজি ১৩শ’ টাকা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ক্ষেতের সবজি নষ্ট হওয়ায় যশোরের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। গত দু দিনের ব্যবধানে বড়বাজারে সবজির দাম যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নি¤œচাপে ভরা মৌসুমেও ইলিশের যোগান কম হওয়ায় বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে অন্যান্য মাছের দামও বেশি। চলতি সপ্তাহে খোলা সয়াবিন তেলের দাম স্থির থাকলেও বেড়েছে সুপার ও পাম তেলের দাম। গত দু সপ্তাহ ধরে চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। কুরবানির পরে এখনও চাহিদা না বাড়ায় মুরগির দাম আরও একটু কমেছে। ক্রেতার অভাবে কাঠেরপুলে ১৮টি দোকানের মধ্যে মাত্র পাঁচটি গরুর মাংসের দোকান খোলা আছে। বড়বাজার মাছবাজার রোডের পাইকারি সবজি বিক্রেতা ‘মনিরামপুর ভা-ার’ এর অন্যতম স্বত্বাধিকারী জহিরুদ্দিন সরদার তার আড়তে বিক্রি করতে আসা চাষিদের উদ্ধৃতি দিয়ে মঙ্গলবার লোকসমাজকে জানান, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ক্ষেতের সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মাত্র দু দিনের ব্যবধানে বাজারে যোগান কমে সবজি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে আরও দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন তিনি। এদিন মাছবাজার রোডের খুচরা বিক্রেতা মো. মজনু মিয়া প্রতিকেজি গাজর ১০০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, উচ্ছে ৫০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, ওল ৫০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, কুমড়ো ৩০ টাকা, মুখিকচু ৩০ টাকা, পটল ২০ টাকা ও লাউ প্রতিটি ৩০/৩৫ টাকায় বিক্রি করেছেন।
এদিকে বড়বাজার মাছবাজারের আড়তদার ‘তিতাস ফিশ’ এর স্বতাধিকারী গোলাম তাহের টগর জানান, মাছের বংশ বৃদ্ধির জন্য ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ২৩ জুলাই থেকে আবারও বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা শুরু হয়েছে। কিন্তু সৃষ্ট নি¤œচাপের কারণে জেলেরা মাছ ধরতে সাগরে নামতে পারছেন না। ভরা মৌসুমেও যশোরে ইলিশ মাছের যোগান কম। এ কারণে যৎসামান্য যা আসছে তার দামও অনেক বেশি।
মঙ্গলবার খুচরা মাছ বিক্রেতা ইকরাম বিশ^াস জানান, তিনি এক কেজি ওজনের নদীর ইলিশ বিক্রি করেছেন ১৩শ টাকা, দেড় কেজি ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি করেছেন ১৫শ টাকা, ৬শ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি করেছেন ১২শ টাকায়। আর দেড় কেজি ওজনের সাগরের ইলিশ (নরম) বিক্রি করেছেন ৮শ টাকায়। ব্যবসায়ীরা জানান, ইলিশ মাছের যোগান কম থাকায় এখনও অন্যান্য মাছের দামও বেশি। মাছ বিক্রেতা সোহাগ মিয়া জানান, তিনি এক কেজি ৭শ গ্রাম ওজনের রুই মাছের কেজি বিক্রি করেছেন ৩শ টাকা, দেড় কেজি ওজনের কাতল মাছের কেজি ২৭০ টাকা, এক কেজি ওজনের মৃগেল মাছ ১৭০ টাকা, ১৫/১৬ টায় কেজি গলদা চিংড়ি ১ হাজার টাকা আর ১৫/১৬ টায় কেজি পাবদা মাছ বিক্রি করেছেন ৩৬০ টাকায়।
বাজারে এ সপ্তাহে খোলা সয়াবিন তেলের দাম না বাড়লেও বেড়েছে সুপার ও পাম তেলের দাম। বড়বাজারের খুচরা তেল বিক্রেতা রবি ব্যানার্জি জানান, তিনি মঙ্গলবার সুপার তেল প্রতিকেজি ১২৮ টাকা দরে বিক্রি করেছেন, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২২ টাকা। আর পাম তেল বিক্রি করেছেন ১২০ টাকায়, গত সপ্তাহে এর দাম ছিল প্রতি কেজি ১১৬ টাকা। তবে এ সপ্তাহে খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৩৫ টাকায় স্থির রয়েছে।
গত দু সপ্তাহ ধরে চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানান বড়বাজার চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুশীল কুমার বিশ^াস। মঙ্গলবার বাজারে খুচরা পর্যায়ে স্বর্ণা চাল প্রতিকেজি ৪৬ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৫০ টাকা, কাজললতা ৫০ টাকা, মিনিকেট ৫৪ টাকা, বাংলামতি ৬০ টাকা ও বিআর-৬৩ চাল ৫৬ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে কুরবানি ঈদের পরে এখনও মাংসের বাজারে বেচাকেনা স্বাভাবিক হয়নি। এ সপ্তাহে মুরগির দাম গত সপ্তাহের থেকে আরও একটু কমেছে। মঙ্গলবার বড়বাজারে বিক্রেতা মো. আজম খামারের ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি ১২৫/১৩০ টাকা, সোনালি ১৮০/১৯০ টাকা, লেয়ার ২০০/২১০ টাকা ও দেশি মুরগি ৪৩০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।
অন্যদিকে ক্রেতার অভাবে কাঠেরপুলে ১৭/১৮টি দোকানের মধ্যে মাত্র পাঁচটি গরুর মাংসের দোকান খোলা রয়েছে। মঙ্গলবার মাংস বিক্রেতা ‘রাজ বিফ হাউস’ এর স্বত্বাধিকারী আব্বাস আলী জানান, কুরবানি ঈদের পরে এখনও বাজারে ক্রেতা আসা তেমন শুরু হয়নি। তারসহ মোট পাঁচটি মাংসের দোকান খোলা রয়েছে। তিনি এদিন মানভেদে প্রতিকেজি গরুর মাংস ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকায় বিক্রি করেছেন বলে জানান।