আটক রানার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ‘টুনি শাওন হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের শেল্টারদাতা নয়ন নামে এক যুবক’

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘যশোর শহরের শংকরপুরে টুনি শাওন হত্যাকান্ডে মূল অভিযুক্ত অনিক হাসান অনি ও গোল্ডেন ফিরোজসহ অন্যদের নয়ন নামে এক যুবক শেল্টার দিয়ে থাকেন। টুনি শাওনকে হত্যার পর গোল্ডেন ফিরোজ মোবাইল ফোনে নয়নের সাথে কথাও বলেছে।’ আটক ইয়াসিন হাসান রানা নামে এক যুবকের আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে টুনি শাওন হত্যার বিষয়ে এমনই তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। তবে জবানবন্দিতে সে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে। গত সোমবার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহাদী হাসানের আদালতে আটক ইয়াসিন হাসান রানা ১৬৪ ধারায় এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
গত রোববার রাতে শহরের ষষ্ঠীতলার একটি বাসা থেকে ইয়াসিন হাসান রানাকে আটক করে ডিবি পুলিশ। তার কাছ থেকে এ সময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি চাকুও উদ্ধার করা হয়। ইয়াসিন হাসান রানা শংকরপুর মুরগির ফার্মগেট এলাকার রবিউল ইসলাম সরদারের ছেলে।
জবানবন্দিতে ইয়াসিন হাসান রানা জানিয়েছে, ‘ঘটনাটি ঘটেছে ঈদের পরদিন। ওইদিন রাত নয়টায় গোল্ডেন ফিরোজ তাকে ফোন দেয় মেডিকেল কলেজের দিকে যাওয়ার জন্য। কিন্তু দাদি অসুস্থ থাকায় এবং খালাতো এক ভাই বাসায় আসবেন এ কারণে সে সেখানে যেতে রাজি হয়নি। তবে সে গোল্ডেন ফিরোজের কাছে জানতে চেয়েছিলো সেখানে কয়জন এবং কারা রয়েছে। জাবাবে গোল্ডেন ফিরোজ তাকে জানিয়েছিলো যে, তারা ৫ জন রয়েছে। এরা হলো গোল্ডেন ফিরোজ, অনি, দিপু, আকাশ ও অপর এক যুবক। এ ঘটনার পরদিন সকালে সে লোকমুখে জানতে পারে টুনি শাওনকে মেরেছে গোল্ডেন ফিরোজ, অনি, দিপু ও আকাশসহ অন্যরা। অভিযুক্তদের শেল্টার দেয় নয়ন নামে এক যুবক। ঈদের তৃতীয় দিন ইয়াসিন হাসান রানা ঝিকরগাছায় তার খালার বাসায় যায়। এরপর সেখান থেকে যশোরে ফেরার পথে ঝিকরগাছা বাজারে গোল্ডেন ফিরোজকে দেখতে পায়। গোল্ডেন ফিরোজ এ সময় নয়নের সাথে ফোনে কথা বলছিলো। ইয়াসিন হাসান রানাকে দেখতে পেয়ে গোল্ডেন ফিরোজ তাকে জানায়, নয়নকে সে বলেছে টুনি শাওন তো মারা গেছে। এখন কী করবেন ? তখন নয়ন বিষয়টি নিজে দেখবেন বলে তাকে জানিয়েছেন। এরপর ইয়াসিন হাসান রানা মোটরসাইকেলে করে সেখান থেকে যশোরে চলে আসে। ওই ঘটনার (টুনি শাওন হত্যা) ৫ মাস আগে টুনি শাওন অনিকে চাকু মেরেছিলো। এ জন্য টুনি শাওনের ওপর অনির রাগ ছিলো। এছাড়া আকাশের সাথেও টুনি শাওনের বিরোধ ছিলো।’
এদিকে টুনি শাওন হত্যাকান্ডে মূল অভিযুক্ত গোল্ডেন ফিরোজ ও অনিসহ অন্যদের এখনো আটক করতে পারেনি পুলিশ। তবে হত্যাকান্ডে গোল্ডেন ফিরোজের ব্যবহৃত ইয়ামাহা আরএক্স মোটরসাইকেলটি জব্দ করতে পেরেছে পুলিশ। গত রোববার রাতে শহরের বেজপাড়ার অ্যাকুরিয়াম ব্যবসায়ী বাবুর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওই মোটরসাইকেল জব্দ করে ডিবি পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ২২ জুলাই রাতে শহরের শংকরপুর ছোটনের মোড়ে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে খুন হয় টুনি শাওন। সে শংকরপুর কলেজ রোডের আব্দুল হালিম শেখ ওরফে ঠিলে মুন্সীর ছেলে। পুলিশ হত্যাকা-ে জড়িত অভিযোগে এ পর্যন্ত ৬ জনকে আটক করেছে।