টিকা পেতে ২০ দিনে ৫১ লাখ নিবন্ধন

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ জুবায়ের আহমেদ পেশায় একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। বয়সের কোটায় টিকা নেওয়ার সৌভাগ্য হলেও রেজিস্ট্রেশন বন্ধ থাকায় এতদিন তা নিতে পারেননি। দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় ছিলেন টিকার জন্য। গত ৭ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে আবারও শুরু হয় টিকার নিবন্ধন। তখনই নিবন্ধন সম্পন্ন করেন তিনি এবং তার দুই দিন পর টিকা নেন।
শুধু জুবায়ের নয়, করোনার টিকা নিতে এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। দেশে করোনার চলমান ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ এবং মৃত্যুর কারণে তাদের টিকার প্রতি আস্থা বেড়েছে অনেকটাই। সেকারণেই নিবন্ধন চালু হওয়ার পর গত ২০ দিনে ৫১ লাখ ৩৯ হাজার ১০৩ জন নিবন্ধন করেছেন। আর মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) পর্যন্ত মোট নিবন্ধন করেছেন ১ কোটি ৩০ লাখ ৬৫ হাজার ৭১৭ জন। তার আগে গত ২ জুলাই থেকে শুরু হয় বিদেশগামী কর্মীদের টিকার জন্য নিবন্ধন। ৩ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত বিদেশগামী নিবন্ধিত হয়েছেন ১ লাখ ৯৫ হাজার ৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২ মে’র পর থেকে বন্ধ হয়ে যায় টিকার নিবন্ধন। সেই সময় ৭২ লাখ ৪৮ হাজার ৮২৯ জনেই থেমে থাকে নিবন্ধন। ৩ জুলাই থেকে নিবন্ধিত ব্যক্তির সংখ্যা বাড়তে থাকে। সেদিন পর্যন্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করেন ৭২ লাখ ৭৭ হাজার ৭৩৫ জন। অর্থাৎ, একদিনে নিবন্ধন করেন ২৮ হাজার ৯০৬ জন। সবার জন্য নিবন্ধন উন্মুক্ত হয় গত ৭ জুলাই।
ওই দিন স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা করোনার টিকা প্রাপ্তির জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন। যদিও পরে বয়সসীমা আরও কমিয়ে আনা হয়েছে। এখন ৩৫ বছরের ব্যক্তিরাও নিবন্ধন করতে পারছেন। এখন থেকে ৩৫ বা তার বেশি বয়সী সবাই করোনার টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন। যারা আগে নিবন্ধন করবেন তাদেরকে আগে টিকা দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৩ জুলাই থেকে নিবন্ধনের সংখ্যা বেড়েছে মূলত বিদেশগামিমী কর্মীদের নিবন্ধনের কারণে। তখনও সবার জন্য নিবন্ধন উন্মুক্ত করা হয়নি। বিদেশগামী কর্মীদের নিবন্ধন পাসপোর্টের মাধ্যমে শুরু হয় ৫ জুলাই থেকে। ৭ জুলাই থেকে নিবন্ধন উন্মুক্ত করার পর এক ধাক্কায় ৬ লাখ ২৪ হাজার ৬২৮ জন মানুষ নিবন্ধন করেন। গত ২০ দিনের হিসাবে দেখা যায়, প্রতিদিন গড়ে ২ লাখ ৫৬ হাজার মানুষ নিবন্ধন করছেন।
এদিকে গত ১৯ জুলাই থেকে টিকা নেওয়ার জন্য ন্যূনতম বয়স কমিয়ে করা হয় ৩০ বছর। বয়স কমিয়ে আনার পর এ পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ২০ লাখ ৭৫ হাজার ৩৯৫ জন। আর গত ১৫ জুলাই টিকা নিবন্ধনকারীর সংখ্যা মোট ১ কোটির মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলে।
টিকার নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজন হয় এনআইডি নম্বর কিংবা বিদেশগামী কর্মী বা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট। তবে এনআইডি যাদের নেই, তাদের ক্ষেত্রে ‘বিশেষ ব্যবস্থা’ নিয়ে ভাবছে সরকার।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, ৫০ এর বেশি যাদের বয়স, সেসব রোগী হাসপাতালে বেশি এবং তারা টিকাও নেননি। এই বয়সীরা অগ্রাধিকার পাবেন টিকার ক্ষেত্রে।
তিনি বলেন, ‘আগামী ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। সেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্ম নিবন্ধন কার্ড নিয়ে গেলেই টিকা দেওয়া যাবে। যাদের এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন কার্ড নেই, তাদেরও কীভাবে টিকার আওতায় আনা যায়, সেটা আমরা ভেবে দেখছি।’