দেশবাসীকে জামায়াত নেতৃবৃন্দের ঈদ শুভেচ্ছা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ চলমান করোনাভাইরাসের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দ্বিতীয় বছরের মতো দেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। এ উপলক্ষে রাজধানীবাসীসহ মুসলিম উম্মাহকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।সোমবার এক যৌথ শুভেচ্ছা বার্তায় নেতৃদ্বয় বলেন, ঈদুল আজহা আমাদেরকে ত্যাগ ও কোরবানির আদর্শে উজ্জীবিত করে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নিজের ধন-সম্পদসহ সবকিছু বিলীন করে দেয়ার চেতনা জাগ্রত করে। ঈদুল আজহা আমাদের শুধু ত্যাগ ও কোরবানির প্রেরণাই দেয় না, সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে, ধনী-গরীবের বৈষম্য দূর করে আমাদেরকে শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় অনুপ্রেরণা দেয়। কোরবানির ঐতিহাসিক শিক্ষা অনুধাবনের মাধ্যমে মুসলমানরা একদিকে আল্লাহর নির্দেশ পালন করেন, অন্যদিকে আল্লাহর পথে আরো দৃঢ়ভাবে চলার জন্য মনস্থির করেন।
দেশব্যাপী এই করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে বিপুল সংখ্যক মানুষ কর্মহীন ও আয়-রোজগার বঞ্চিত হয়ে পড়েছেন। তাদের নিকটজন ও পরিবারের সদস্যদের ন্যূনতম চাহিদা পূরণ করা তাদের জন্য অনেকটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে এবং অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছে। এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোই এখন সবচেয়ে বড় আত্মত্যাগ এবং আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি হাসিলের বড় মাধ্যম।
করোনা পরিস্থিতিতে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াত সাধারণ মানুষদের সেবা দেয়ার লক্ষ্যে ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, ফ্রি চিকিৎসা সেবা, ফ্রি অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহসহ আর্থিক ও নানাবিধ সহযোগিতামূলক কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। এতে জনগণ উপকৃত হলে আমাদের শ্রম সার্থক হয়েছে বলে আমরা মনে করবো।নেতৃদ্বয় সেইসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কল্যাণে সামর্থ্যবান সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।
নেতৃদ্বয় এই মহামারীর ভয়াবহতা ও বিপর্যয়কর অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করেন। সেইসাথে সবাইকে সর্বাবস্থায় মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে স্বাস্থ্য সচেতন থেকে ঈদ উদযাপন করার আহ্বান জানান।
ঢাকা মহানগর উত্তর
ত্যাগের মহিমায় সমুজ্জ্বল পবিত্র ঈদুল আজহার প্রকৃত শিক্ষা রাষ্ট্রীয়, সমাজ, পরিবার ও ব্যক্তিজীবনে প্রতিফলনের ঘটিয়ে কল্যাণমুখী সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নগরবাসীর উদ্দেশে এক শুভেচ্ছাবাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশ পালনার্থে মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইব্রাহীম আ: নিজের ছেলে হজরত ঈসমাইল আ:-কে কোরবানি করতে প্রয়াসী হয়েছিলেন। সে আদর্শ অনুসরণেই মুসলিম উম্মাহ দিবসটিকে পবিত্র ঈদুল আজহা হিসেবে পালন করে আসছে। মূলত, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতি একনিষ্ঠ আনুগত্য, তার প্রকৃত সন্তুষ্টি ও মানবকল্যাণে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগই ঈদুল আজহার প্রকৃত শিক্ষা। বস্তুত, নিজের পশুপ্রবৃত্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপই পশু কোরবানির প্রকৃত উদ্দেশ্য। কালামে হাকীমে বলা হয়েছে, ‘কোরবানির পশুর রক্ত, গোশত কোনোকিছুই আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, পৌঁছে কেবল তোমাদের তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতি’ (সূরা-হজ্জ, আয়াত-৩৭)। তাই কোরবানির শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আত্মগঠন ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে আর্তমানবতার মুক্তির জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, জাগতিক লোভ-লালসা ও কামনা-বাসনার উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে পশুপ্রবৃত্তির উপর বিজয় অর্জনই ঈদুল আজহার প্রকৃত শিক্ষা। অন্যায়-অসত্য, অনাচার-পাপাচার, হিংসা-বিদ্বেষ, জুলুম-নির্যাতন, বিভেদ-বিসংবাদ বন্ধ করে সমাজ-রাষ্ট্রে সার্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবজাতির প্রকৃত কল্যাণ সাধন করা পবিত্র ঈদুল আজহার উদ্দেশ্য। কোরবানি হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যাণময় নিদর্শন। আর সে কল্যাণকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোই মোমিন জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
তিনি আরো বলেন, চলমান করোনা মহামারীর কারণেই জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ তাদের কর্মসহ আয়-রোজগার হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এমতাবস্থায় ঈদুল আজহার প্রকৃত শিক্ষা ধারণ করে আমাদের সকল সামর্থকে কাজে লাগিয়ে করোনা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বাড়ি প্রয়োজনীয় খাদ্য, ঈদ সামগ্রী ও কোরবানির গোশত পাঠিয়ে ঈদের আনন্দকে তাদের সাথে ভাগাভাগি করতে হবে। তাহলেই ঈদ হয়ে উঠবে অর্থবহ।
তিনি বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে সমাজের বিত্তবান মানুষসহ দলীয় সকল স্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান এবং পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নগরবাসীর প্রতি শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।