কোটচাঁদপুরে সাবেক সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

0

কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা ॥ ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাবেক এমপি নবী নেওয়াজের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নাম করে মানুষের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে উঠেছে কোটচাঁদপুরে মানববন্ধন হয়েছে। টাকা ফেরতের দাবিতে গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে ভুক্তভোগী পরিবারের ব্যানারে কোটচাঁদপুর উপজেলা চত্বরে মানববন্ধনটি করা হয়।
মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়, ২০১৪ সালে নবী নেওয়াজ ঝিনাইদহ-৩ আসনে (কোটচাঁদপুর-মহেশপুর) আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন। সে সময় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরীর চাকরির প্রলোভন দেখান এমপি নবী নেওয়াজ। চাকরির আশায় এমপির কথামত তার স্বজনদের হাতে টাকা তুলে দেন। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও সে চাকরি হয়নি বা টাকাও কেউ ফেরত পাননি । বর্তমানে সম্পদ হারিয়ে ভুক্তভোগী গরীব পরিবারগুলো চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে। বিষয়টি সমাধান করবেন বলে একের পর এক ঘোরানো হচ্ছে বলেও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
ভুক্তভোগী কোটচাঁদপুর উপজেলার দোড়া ইউনিয়নের ধোপাবিলা গ্রামের শুকুর আলী মাস্টারের ছেলে আহসানুল হক সাবু বলেন, ২০১৫ সালের দিকে আমাকে নৈশ প্রহরীর চাকরির দেওয়ার কথা বলে সাবেক এমপির আত্মীয় মহেশপুর উপজেলার আলামপুর গ্রামের মান্নানের মাধ্যমে ৬লাখ ২০হাজার টাকা নেন সাবেক এমপি নবী নেওয়াজ। টাকাগুলি মান্নানের সাথে যেয়ে ঢাকা ন্যাম ভবনে এমপির হাতে দিয়েছিলেন। চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে এমপি নবী নেওয়াজের আত্মীয় মান্নান ও তার বাহিনী দিয়ে সাবুকে ও তার শ্বশুরকে মারধোর করেছে । তাছাড়া পুলিশ দিয়ে একাধিকবার হয়রানিও করা হয়েছে।
আরেক ভুক্তভোগী কোটচাঁদপুর উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামের আমিরুল ইসলাম সরদার মানববন্ধনে বলেন, তার এতিম ভাইপো রুহুল আমিনের চাকরির জন্যে সে সময়ে এমপি নবী নেওয়াজের আশ্বাসে তার ভাগনে আতিয়ার রহমানের কাছে চুক্তির ৭লাখ টাকা দেওয়া হয়। এটার জন্যে জমি বিক্রি করা হয় এবং এনজিও থেকে লোন নেওয়া লাগে। কোটচাঁদপুর কলেজস্ট্যান্ডের সিরাজুল ইসলামের বাসায় বসে সে টাকা আতিয়ার রহমানের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এক পর্যায়ে তার সংসদ সদস্য পদ শেষ হয়ে গেলেও চাকনি না পাওয়ার পর এক শালিসী বৈঠকে বাধ্য হয়ে এমপি নবী নেওয়াজের ভাগনে আতিয়ার ৫লাখ ৮৫হাজার টাকার বেসিক ব্যাংকের একটি চেক দেন। চেক নং- ০২০৯২০১৯ । চেকটি ব্যাংকে জমা দিলেও একাউন্টে টাকা না থাকায় চেকটি পাশ হয়নি। পরে আবারও শালিসের মাধ্যমে ২লাখ টাকা নগদ ফেরত দেন তারা। এর পর থেকে বাকি টাকা নিয়ে টালবাহানা করছেন। এদিকে অভিযুক্ত আতিয়ার মোবাইল ফোনে বলেন, টাকা সাবেক এমপি নবী নেওয়াজ নেননি। তিনি দাবি করেন এমপি সাহেব নিজে যাদের টাকা নিয়েছিলেন তাদের প্রত্যেককেই চাকরি দিয়েছেন।
এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমান এমপি অ্যাড. শফিকুল আজম খান চঞ্চল বলেন, এ ধরণের একাধিক অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। তবে তিনি সাবেক এমপি তার বিরুদ্ধে আমিতো ব্যবস্থা নিতে পারিনা। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতারা দেখবেন। কোটচাঁদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজাহান আলী বলেন, নবী নেওয়াজ এমপি থাকা অবস্থায় চাকরির দেওয়ার কথা বলে গণহারে টাকা নেয়াসহ তার অন্যান্য অপকর্মের কথা জেলা মিটিং-এ তুলে ধরে ছিলাম। সেখানে জেলা নেতৃবৃন্দ ছাড়াও অনেক কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মহেশপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ময়জদ্দিন হামিদ অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গরীব অসহায় পরিবারদের সাথে এমন আচারণ মেনে নেওয়া যায় না। এর একটা সুরাহা হওয়া প্রয়োজন।
অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে সাবেক এমপি নবী নেওয়াজের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, টাকা আমি নেইনি। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য প্রতিপক্ষ একটি মহল এ সব প্রচারণা করছে।