ট্রেনে ভিড়হীন যাত্রা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ স্বাভাবিক ঈদের মতো ভিড় নেই রাজধানী ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। অন্য যেকোনও সময়ের চেয়ে এবারের ঈদ যাত্রা অনেকটা আলাদা। শুধু নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী ছাড়া স্টেশনে অন্য ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে না। এতে রেল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি খুশি সাধারণ যাত্রীরাও। সাধারণ যাত্রীরা বলছেন, অন্যান্য পরিবহনেও যদি এ ধরনের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা যেতো তাহলে করোনার সংক্রমণ কমে আসতো।
স্টেশন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, এ বছর করোনা মহামারির কারণে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখেই চলছে ঈদযাত্রা। নির্ধারিত আসনের সব টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হয়েছে। কাউন্টারে শুধু মেইল কমিউটার ট্রেনগুলোর টিকিট দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে আগের মতো ভিড় নেই। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট নিয়ে কাড়াকাড়িও নেই এবারের ঈদযাত্রাতে।
সকালে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারোয়ার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সকাল পর্যন্ত ১২টির মতো ট্রেন ছেড়ে গেছে। সব ট্রেনে আসন সংখ্যা অর্ধেক আসন তথা শুধু বিজোড় সংখ্যার আসনের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। স্টেশন ও ট্রেনে প্রবেশের সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার করা হচ্ছে। মাস্ক ছাড়া কোনও যাত্রীকে স্টেশন ও ট্রেনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সব যাত্রী অত্যন্ত সুন্দর ও নিরিবিলিভাবে ভ্রমণ করতে পারছেন।
সকালে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে যাত্রীরা সারিবদ্ধভাবে স্টেশনে প্রবেশ করছেন। প্রবেশ পথে রেলওয়ের কর্মীরা প্রত্যেক যাত্রীর হাত স্যানিটাইজ করাচ্ছেন। একইভাবে ট্রেনে প্রবেশ করার সময়ও যাত্রীর হাত স্যানিটাইজ করানো হচ্ছে।
সকালে রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী সামছুদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বাসে অনেক ঝুঁকি। রাস্তাঘাটও ভালো না। অনেক যানজট। তাই ট্রেনই আমাদের জন্য অনেক নিরাপদ। অনলাইনে বারবার চেষ্টা করার পর টিকিট পেয়েছি। এখন বাড়িতে যাওয়ার জন্য এসেছি। একটু পর ট্রেন ছেড়ে যাবে। পরিবেশ দেখে অনেক ভালো লাগছে।
যাত্রী হাবিবা নাসরিন বুসরা বলেন, ট্রেনে অন্যান্য বছর যেমন ছাদে করেও যাত্রী বহন করা হতো এ বছর সেই ঝুঁকি নেই। এক আসনে বসলে আরেক আসন ফাঁকা। সব পরিবহনে যদি এমন ব্যবস্থা চালু করা যেতো তাহলে অবশ্যই ভালো হতো।
রেলওয়ের উপ-পরিচালক (অপারেশনস) মো. রেজাউল হক বলেন, বেশ কিছু নিয়ম মেনে ট্রেন চলাচল করছে। যাত্রার দিনসহ ৫ দিন আগে আন্তনগর ট্রেনগুলোর অগ্রিম টিকিট ইস্যু করা হয়। আন্তনগর ট্রেনের সব টিকিট একসঙ্গে অনলাইন এবং মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে। কাউন্টার থেকে কোনও টিকিট বিক্রি করা হয়নি। অনলাইন এবং মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিক্রি করা টিকিট রিফান্ড করা যাবে না বা ফেরত নেওয়া হবে না। আন্তনগর ট্রেনে সব ধরনের স্ট্যান্ডিং টিকিট ইস্যু সম্পূর্ণভাবে বন্ধ।
তিনি আরও বলেন, যাত্রীদের সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কোচের ধারণ ক্ষমতার শতকরা ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। রাত্রীকালীন ট্রেনে বেডিং সরবরাহে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে জারিকৃত সব বিধিনিষেধ পালন নিশ্চিত করা হচ্ছে। এছাড়া বিদ্যমান স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেনে চা, কফি, বোতলজাত পানি, প্যাকেটজাত খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।