সাংবাদিক শামছুর রহমান হত্যাকাণ্ড ঘাতকদের বিচার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর জেইউজে’র স্মারকলিপি

0

প্রতিথযশা সাংবাদিক যশোরের শামছুর রহমান কেবল হত্যাকাণ্ডের ঘাতকদের বিচার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন (জেইউজে)। বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোরের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নেতৃবৃন্দ স্মারকলিপি দেন। এছাড়াও জেইউজে হত্যার দিন আজ ১৬ জুলাই বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারও সংক্ষিপ্ত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কালোব্যাজ ধারণ, শোকর‌্যালি ও শহীদের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন ও দোয়া প্রার্থনা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, যশোরের শহীদ সাংবাদিক শামছুর রহমান কেবল হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পার হলেও ঘাতকদের বিচারের মুখোমুখি করা যায়নি। বরং গত ১৬ বছর ধরে আইনের মারপ্যাঁচে আটকে রয়েছে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া।
প্রথিতযশা সাংবাদিক শামছুর রহমান কেবল ২০০০ সালের ১৬ জুলাই রাতে জনকন্ঠ যশোর অফিসে কর্মরত অবস্থায় আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। খুন হবার পর ২০০১ সালে সিআইডি পুলিশ এই মামলায় ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। সে সময় বিগত চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর কয়েক আসামির আগ্রহে মামলার বর্ধিত তদন্ত করে শামছুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সাংবাদিক নেতা ফারাজী আজমল হোসেনকে নতুন করে আসামি করা হয়।
একইসাথে মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে বাদ দিয়ে সাক্ষী করা হয় আসামিদের ঘনিষ্ঠজনদেরকে। এতে একদিকে মামলার বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়, অন্যদিকে দুর্বল হয়ে যায় চার্জশিট। এরপর বিতর্কিত ওই বর্ধিত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর ২০০৫ সালের জুন মাসে যশোরের স্পেশাল জজ আদালতে এই মামলার চার্জ গঠন হয়। ওই বছরের জুলাই মাসে বাদীর মতামত ছাড়াই মামলাটি খুলনার দ্রুত বিচার আদালতে স্থানান্তর করা হয়। এ অবস্থায় মামলার বাদী শহীদ শামছুর রহমানের সহধর্মিণী সেলিনা আকতার লাকি বিচারিক আদালত পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে হাইকোর্টে আপিল করেন।
আপিল আবেদনে তিনি বলেন, মামলার অন্যতম আসামি খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী হিরক পলাতক রয়েছে। হিরকসহ সংশ্লিষ্ট মামলার অন্যান্য আসামিদের সাথে খুলনার সন্ত্রাসীদের সখ্যতা রয়েছে। ফলে তার (বাদী’র) পক্ষে খুলনায় গিয়ে সাক্ষী দেয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বাদীর এই আপিল আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট মামলাটি কেন যশোরে ফিরিয়ে দেয়া হবে না তার জন্য সরকারের ওপর রুলনিশি জারি করেন। এরপর মামলায় বর্ধিত তদন্তে সংযুক্ত আসামি ফারাজী আজমল হোসেন উচ্চ আদালতে একটি রিট করেন। সেই রিটের নিষ্পত্তি না হওয়ায় মামলার সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।
বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতকালে হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়েছেন। এছাড়া তারা একই দাবিতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছেন। কিন্তু কোনো অগ্রগতি হয়নি।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ২১তম হত্যাবার্ষিকীতে দাঁড়িয়ে এ হত্যা মামলার পুনঃতদন্তসহ দ্রুত বিচার ও জড়িতদের শাস্তি দাবি করছে জেইউজে। পাশাপাশি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, সংবাদপত্রের পূর্ণ স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি করা হয়েছে। জেইউজে’র যুগ্ম সম্পাদক তবিবর রহমান এ বার্তা পাঠিয়েছেন। বিজ্ঞপ্তি