কালীগঞ্জে বিপাকে কলাচাষিরা

0

শিপলু জামান, কালীগঞ্জ(ঝিনাইদহ)॥ টানা লকডাউনের প্রভাব পড়েছে কলার দামের উপর, একই কারণে বিক্রিও কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে কলাচাষিরা। ভাগ্য বদলের আশায় কলাচাষ করেছিলেন জেলার কয়েকশ কলাচাষি। ভালো দাম না থাকায় দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাদের চোখে-মুখে।
কালীগঞ্জ শহরের যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের কলার বড় হাটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ব্যাপারিদের আনাগোনা কম। নেই কোনো কোলাহল। অনেক চাষিরা কলা নিয়ে বসে আছেন সপ্তাহের পর সপ্তাহ। আর্থিক সংকটের মুখে রয়েছেন অনেকে। এক সময় সপ্তাহে দুদিন কলা কেনার জন্য ভিড় লেগেই থাকতো ব্যাপারিদের। কঠোর লকডাউনে পরিবহন না চলাতে কোনো ব্যাপারি আসতে পারছে না। ফলে অনেক কলা আড়তেই পচে নষ্ট হচ্ছে। । কালীগঞ্জ উপজেলায় রায়গ্রাম, ফরাশপুর, বেলেডাঙ্গা, সুন্দরপুর, কালুখালী , বারবাজার, কলার চাষ বেশি হয়েছে। প্রথমদিকে ভালো দাম পেলেও কঠোর লকডাউন শুরুর পর থেকে কলার দাম কমে যাওয়ায় লোকসান গুনছেন চাষিরা। সপ্তাহে দুইদিনে ছোট থেকে বড় অন্তত ২০ থেকে ২৫টি ট্রাক লোড হতো। সেখানে বর্তমানে শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে।
বড় বড় ব্যবসায়ীরা এখন আর আসছে না। এক কাঁদি চাঁপাকলা (স্থানীয় নাম ঘাউর) ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। সবরি কলার কাঁদি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, সাগর ও রঙিন মেহের সাগর কলার কাঁদি পাইকারি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা বিক্রি হয়। সেখানে প্রতি কাঁদি কলা ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় নেমে এসেছে। কালীগঞ্জ উপজেলার কলার আড়তে বিভিন্ন গ্রামে থেকে কলা নিয়ে আসেন স্থানীয় ব্যাপরিরা। সে আড়তে আড়তে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, বগুড়া, বরিশাল, খুলনা, সিলেট, চিটাগাং থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আসেন কলা কিনতে। বর্তমানে কঠোর লকডাউনের কারণে হাট বাজারে লোক সমাগম কম থাকায় ব্যবসায়ীরা আসছেন না।
ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের কলাচাষি শাহজান আলী বলেন, সংসারে অভাব-অনটন থেকে মুক্তি পেতে কলাচাষ করেছি। কিন্তু এ বছর করোনা মহামারি ও কঠোর লকডাউনের কারণে কলার ভালো দাম না থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমার দেখাদেখি এই এলাকায় বেশ কয়েকজন কলাচাষে ঝুঁকেছেন। স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ী জামাল হোসেন বলেন, ঝিনাইদহ জেলার মাটি কলাচাষের জন্য ভালো। সারা দেশে কালীগঞ্জ উপজেলার কলার সুনাম রয়েছে।
কালীগঞ্জ কৃষি অফিসার শিকদার মোহাইমেন আক্তার বলেন, চলতি বছর কলার উৎপাদন ভালো হয়েছে। তবে কঠোর লকডাউনে বাইরের জেলা থেকে কলা ব্যবসায়ীরা না আসায় লোকসানে পড়েছেন চাষিরা।