লকডাউন: বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে বাড়ি ফিরতে চান ইবি শিক্ষার্থীরা

0

ইমানুল সোহান, ইবি ॥ করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দেশব্যাপী চলছে কঠোর লকডাউন। বন্ধ রয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন। এ অবস্থায় নিরাপদে বাড়ি ফেরা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে ক্যাম্পাসের আশপাশে অবস্থানরত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) এর শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে (বাস) বিভাগীয় শহরে পৌঁছে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কঠোর লকডাউনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের বিভিন্ন মেসে অবস্থান করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী। এ দুই জেলায় করোনা সংক্রমণের উর্ধ্বগতি ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এমন অবস্থায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে মেসে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। অনেক শিক্ষার্থী জ্বরসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে মেসে অবস্থান করছেন বলেও জানা গেছে। এতে অভিভাবকরাও সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। তাই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব পরিবহনযোগে বিভাগীয় শহরে যাওয়ার জন্য প্রশাসন বরাবর দাবি জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা চিন্তা করে গুগল ফর্মে শিক্ষার্থীদের তথ্য চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। ১২ জুলাই শিক্ষার্থীদের গুগল ফরমে তথ্য পূরণের সময় শেষ হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থানরত বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মাঈদুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে কোরবানির ঈদের পর হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে আমি রংপুর থেকে চলে আসি। একই সাথে টিউশনি করাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের মেসগুলো শিক্ষার্থীদের তুলনায় অনেক কম। ঈদের পরে এলে থাকার জায়গা পাওয়াটা মুশকিল হয়ে যাবে। সেটা ভেবে আমিসহ আমার বন্ধুবান্ধব মেসে চলে আসি। তাছাড়া বাড়ি থেকেও তেমন লেখাপড়া হয় না। কিন্তু হঠাৎ করে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় লকডাউনের ঘোষণা চলে আসে। দিনে দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি।’ দাওয়াহ বিভাগের শিক্ষার্থী আল মামুন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে করোনার উপসর্গ। যে কোনো সময় আমরা নিজেরাই আক্রান্ত হয়ে পড়তে পারি। তাছাড়া শেখপাড়া এলাকায় বেশিরভাগ সময়ই প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়া যায় না। এ অবস্থায় এখানে অবস্থান করাটা আমাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সিদ্ধান্তই পারে আমাদের এ অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে। আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, প্রশাসন যেন নিজস্ব পরিবহনে আমাদের বিভাগীয় শহরে পৌঁছে দেয়।’
এ বিষয়ে পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে মিটিং হবে। মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে এখনো পজিটিভ আছি। শিক্ষার্থীদের গুগল ফরমে তথ্য পূরণের সময় শেষ হয়েছে। এরপর এটা নিয়ে বসব। শিক্ষার্থীদের তালিকা দেখে আমরা পরবর্তী পরিকল্পনা গ্রহণ করব। আগামী ১৪ তারিখ পর্যন্ত লকডাউন আছে। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে কী সিদ্ধান্ত হয়, সেটাও আমাদের দেখতে হবে।’