যশোরে আলোচিত মান্নাত হত্যাকাণ্ডে স্ত্রী ও ভগ্নিপতিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে প্রায় ৯ মাস আগে যশোরে নির্মমভাবে খুন হয়েছিলেন এস্কেভেটরচালক ই¯্রাফিল হোসেন মান্নাত। আলোচিত এই হত্যাকা-ে স্ত্রী ও ভগ্নিপতিসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে ডিবি পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই মো. শামীম হোসেন আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেন।
অভিযুক্তরা হলেন-নিহতের স্ত্রী শারমিন সুলতানা সুমি, শহরের পুরাতন কসবা মানিকতলা আবু তালেব সড়কের মৃত শফিয়ার রহমানের ছেলে ও নিহতের ভগ্নিপতি শাহ আলম ওরফে শাহা আলী রহমান মৃধা, সদর উপজেলার সুজলপুরের সলেমান হোসেনের ছেলে ও অভিযুক্ত শাহ আলমের ভাগ্নে শামীম হোসেন, আব্দুর রশিদ শেখের ছেলে রায়হান শেখ, শফিকুল ইসলাম বাবুর ছেলে নয়ন হোসেন, শহরের বকচর চৌধুরীপাড়ার নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও নিহতের শাশুড়ি সুফিয়া বেগম, সদর উপজেলার রামনগর খাঁপাড়ার সোয়েদ আলী খান ওরফে ছমেদের ছেলে ও অভিযুক্ত শাহ আলমের গাড়িচালক আল আমিন, মাহিদিয়া পশ্চিমপাড়ার হাবিবুর রহমানের ছেলে আল আমিন ওরফে গ্যারেজ আল আমিন ও শহরের পুরাতন কসবা কাঁঠালতলার আবু তাহেরের ছেলে আরাফাত হোসেন রিফাত। অবশ্য অভিযুক্তদের মধ্যে শারমিন সুলতানা সুমি, সুফিয়া বেগম ও শামীম হোসেনকে আটক করতে পারেনি ডিবি পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই মো. শামীম হোসেন জানান, এস্কেভেটরচালক মান্নাতের স্ত্রী সুমির সাথে ভগ্নিপতি শাহ আলমের পরকীয়া ও অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে শাহ আলমের হাত ধরে পালিয়ে যান সুমি খাতুন। তারা ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে বসবাস করতে থাকেন। কিন্তু আশেপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে যাওয়ায় তারা তাদের ওপর চড়াও হন। ফলে কোটচাঁদপুরে থাকতে না পেরে সেখান থেকে সুমিকে নিয়ে ফের যশোরে চলে আসেন শাহ আলম। উপশহর এলাকায় ঘর ভাড়া করে সেখানে সুমিকে রেখে দেয়া হয়। এদিকে স্ত্রী সুমি যশোরে আছে এমন খবর পেয়ে তাকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন মান্নাত। তার সন্ধান পেতে তিনি শাহ আলমের গাড়িচালক আল আমিনের সাথে যোগাযোগ করেন। কিন্তু আল আমিন বিষয়টি শাহ আলমকে জানিয়ে দেন। ফলে শাহ আলম পথের কাঁটা সরিয়ে ফেলতে মান্নাতকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। গত বছরে ২৩ অক্টোবর রাতে সুমির সন্ধান দেওয়ার মিথ্যা কথা বলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গাড়িচালক আল আমিন কৌশলে শহরের কারবালা এলাকায় ডেকে আনেন মান্নাতকে। সেখানে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা শাহ আলমের ভাগ্নে শামীমসহ কয়েকজন রাতের আঁধারে পেছন থেকে মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে এবং লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। পরদিন সকালে মান্নাতের লাশ অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার হয়েছিলো। তবে পরে তার পরিচয় পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতের মা আনোয়ারা বেগম ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৬-৭ জনকে আসামি করে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। আসামিরা হলেন-শাহ আলম, শামীম হোসেন, শারমিন সুলতানা সুমি ও সুফিয়া বেগম। তবে তদন্তে পরিকল্পনাকারী ও সরাসরি হত্যায় জড়িত হিসেবে আরো ৫ জনের নাম উঠে আসে। এরা হলেন-গাড়িচালক আল আমিন, গ্যারেজ আল আমিন, আরাফাত হোসেন রিফাত, রায়হান শেখ ও নয়ন হোসেন। তদন্তকালে এসব আসামির মধ্যে শারমিন সুলতারা সুমি, শামীম হোসেন ও সুফিয়া বেগম বাদে অন্য আসামিদের বিভিন্ন সময় আটক করা হয়। তবে চেষ্টা চালিয়েও শারমিন সুলতানা, সুফিয়া বেগম ও শামীম হোসেনকে আটক করা যায়নি।