বাঘারপাড়ায় টাকা আত্মসাতকারী ব্যাংক এশিয়ার এজেন্টসহ আটক ৭

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের বাঘারপাড়ায় গ্রাহকদের প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের চতুরবাড়িয়া এজেন্ট ব্যাংকিং পরিচালক আনোয়ার জাহিদসহ ৭ জনকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় নগদ ৩০ হাজার টাকা ও গ্রাহকের ২৭টি নকল আমানত জমা বই জব্দ করা হয়েছে।
ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার রাতে বাঘারপাড়ার খাজুরায় প্রথমে অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মুশফিকুর রহমান রতনকে তারা আটক করেন। তার কাছ থেকে এ সময় নগদ ৩০ হাজার টাকা ও ২৭টি নকল আমানত জমা বই জব্দ করা হয়। মুশফিকুর রহমান রতন প্রধান আসামি আনোয়ার জাহিদের অন্যতম সহযোগী। পরে হালদা গ্রামে অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত দুই আসামি মাজেদ মোল্লা ও আব্দুল আজিজ মোল্লাকে তারা আটক করেন। এই দু’জন প্রধান আসামি আনোয়ার জাহিদের ভাই। তিনি বলেন, প্রধান আসামি আনোয়ার জাহিদ টাকা আত্মসাৎ করে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন। এ খবর পেয়ে গত মঙ্গলবার রাতে তারা বেনাপোলে অভিযান চালান। সেখান থেকে এ সময় আনোয়ার জাহিদকে অবৈধভাবে ভারতে যেতে সহায়তার অভিযোগে ৩ জনকে আটক করা হয়। এরা হলেন-সদর উপজেলার বানিয়াবহু পশ্চিমপাড়ার মৃত আব্দুল হোসেনের ছেলে শাহিন হোসেন, শার্শা উপজেলার মহিষাডাঙ্গা মাঝেরপাড়ার মৃত আয়না ঢালীর ছেলে রজ্জত আলী ও শিকড়ি পশ্চিমপাড়ার রবিউল ইসলামের ছেলে ইমানুর রহমান। জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা আনোয়ার জাহিদকে অবৈধ পথে ভারতে যেতে সহায়তার কথা স্বীকারও করেন। সেই সাথে তারা একথা বলেন যে, আনোয়ার জাহিদ চৌগাছা সীমান্ত দিয়ে পরে দেশে ঢুকেছেন বলে জানতে পেরেছেন। তাদের দেয়া এই তথ্যের প্রেক্ষিতে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, আনোয়ার জাহিদ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রামে ভায়রার বাড়িতে আত্মগোপন করে রয়েছেন। বুধবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সেখানে অভিযান চালিয়ে তারা আনোয়ার জাহিদকে আটক করেন।
ডিবি পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিলেও আনোয়ার জাহিদ তাদের অ্যাকাউন্টে জমা দিতেন না। নিজের তৈরি নকল আমানত জমা বইতে ‘জমা’ লিখে গ্রাহকদের সাথে তিনি প্রতারণা করতেন। তার এই কাজের প্রধান সহযোগী একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুৎ মুশফিকুর রহমান রতন। বেসরকারি ওই ব্যাংক থেকে ৮১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে মুশফিকুর রহমান রতনের বিরুদ্ধে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই আরিফুল ইসলাম জানান, বুধবার আটক ৭ জনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এদের মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি আনোয়ার জাহিদ ও মুশফিকুর রহমান রতনের আদালতে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। শুনানি শেষে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহাদী হাসান তাদের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
উল্লেখ্য, ৩৪ জন গ্রাহকের ৪১ লাখ ৬শ’ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংক এশিয়ার বাঘারপাড়ার চতুরবাড়িয়া এজেন্ট ব্যাংকিং পরিচালক আনোয়ার জাহিদসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার থানায় মামলা হয়। ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং ডিভিশনের রিলেশনশিপ অফিসার লিকো আহম্মেদ মামলাটি করেন।