বিলুপ্তপ্রায় ‘মাদ্রাজ কুমিরের’ চিকিৎসা শুরু

0

মোংলা প্রতিনিধি॥কুমির মাদ্রাজকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য পুকুর থেকে তোলা হয়কুমির মাদ্রাজকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য পুকুর থেকে তোলা হয়‘মারস ক্রোকোডাইল’ বা জলাভূমির কুমির এখন দেশ থেকে বিলুপ্তপ্রায়। এই প্রজাতির কুমির এখন আছে শুধু বাগেরহাটের হজরত খানজাহান আলীর (রাহ.) মাজার দিঘিতে আর গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে। এই কুমিরের বিচরণ ছিল পদ্মা নদীসহ দেশের বিভিন্ন জলাভূমিতে। এখন এর অস্তিত্ব শুধু বাগেরহাট ও গাজীপুর বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে আছে।
বাগেরহাটের যে দিঘিতে কুমির দুটি রয়েছে তা এখন বয়স্ক ও অসুস্থ। বয়সের ভারে ও অসুস্থতায় হারিয়েছে প্রজননক্ষমতা। এ অবস্থায় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তাদের চিকিৎসার উদ্যোগ নিয়েছে বন বিভাগ। বুধবার (০৭ জুলাই) দুপুরে ওই পুকুরের ৫০ বছর বয়সের পুরুষ কুমির মাদ্রাজকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ওপরে তোলা হয়। পরে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
কুমিরটিকে পুকুর থেকে তুলে চিকিৎসা দেন পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ইনচার্জ ও বন্যপ্রাণী লালন-পালনে অভিজ্ঞ হাওলাদার আজাদ কবির। কুমিরটিকে বেশ কিছু ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। পর্যবেক্ষণের জন্য কুমিরটিকে আগামী ১০ দিন দিঘিসংলগ্ন একটি বাড়িতে রাখা হবে বলে জানান হাওলাদার আজাদ কবির।
তিনি বলেন, দিঘির পুরুষ কুমিরটির ডান চোখ আগে থেকেই নষ্ট, বাঁ চোখটিও নষ্টের পথে। শরীরের আর কোথায় কী ধরনের সমস্যা রয়েছে তা ভালো করে দেখা হচ্ছে। আশা করছি ভালোভাবে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা গেলে ভালো হয়ে উঠবে। অপর যে নারী কুমিরটি রয়েছে সেটিরও একটি চোখ নষ্ট। সেটি ডিম দিলেও বাচ্চা ফুটছে না।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের নির্দেশে কুমিরটির চিকিৎসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান আজাদ কবির।
কুমির দুটি ‘মাদ্রাজ কুমির’ নামে পরিচিত। কারণ কুমিরগুলো ভারতের মাদ্রাজ থেকে আনা হয়েছিল। এই দিঘিতে এখন দুটি কুমির রয়েছে। দেড় বছর আগে মারা গেছে ‘কালা পাহাড়’ আর চার বছর আগে ‘ধলা পাহাড়’ নামের কুমির দুটি। তারপর আরও দুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে সুন্দরবনে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে পাঠানো হয়। সর্বশেষ যে দুটি রয়েছে তাও এখন অসুস্থ।