দশ হাজার টাকার আবেদনে মিলল ৫৪ শেয়ার

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করা বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আবেদন করা সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ১০ হাজার টাকার আবেদনে ৫৪টি করে শেয়ার বরাদ্দ পেয়েছেন।সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) নিকুঞ্জের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে কোম্পানিটির এই শেয়ার বরাদ্দ দেয়া হয়।সাধারণ বিনিয়োগকারীদের তুলনায় আইপিওতে দ্বিগুণের বেশি শেয়ার পেয়েছেন প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা। তারা ১০ হাজার টাকার আবেদনে ১২৮টি করে শেয়ার পেয়েছেন।
নতুন নিয়মের আইপিওতে দ্বিতীয় কোম্পানি হিসেবে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের শেয়ার বরাদ্দ দেয়া হলো। আইপিও’র নতুন পদ্ধতি অনুযায়ী আবেদন করা প্রত্যেক বিনিয়োগকারী শেয়ার পাচ্ছেন। আইপিও আবেদনের ওপর ভিত্তি করে বিনিয়োগকারীদের সমানুপাতিক হারে এই শেয়ার বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে।
আইপিও’র নতুন নিয়মে প্রথম কোম্পানি হিসেবে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার বরাদ্দ দেয়া হয়। যেসব দেশীয় সাধারণ বিনিয়োগকারী সোনালী লাইফের আইপিওতে ১০ হাজার টাকার আবেদন করেন তারা ১৭টি করে শেয়ার বরাদ্দ পান। সে হিসেবে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের আইপিওতে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে অনুমোদন নিয়ে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার ১৩ জুন থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আইপিও আবেদন গ্রহণ করে। আইপিওতে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম নির্ধারণ করা হয় ২৯ টাকা।
এই দামে আইপিওতে একজন বিনিয়োগকারীর সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকার আবেদন করার সুযোগ ছিল।এর আগে কোম্পানিটিকে আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ২২৫ কোটি টাকা মূলধন উত্তোলনের অনুমোদন দেয় বিএসইসি।
এরপর নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন নিয়ে শেয়ারের মূল্য নির্ধারণে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য বিডিংয়ের আয়োজন করে। বিডিংয়ে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের প্রস্তাবিত দামের ওপর ভিত্তি করে কোম্পানিটির আইপিও মূল্য নির্ধারণ করা হয় ২৯ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে টাকা উত্তোলন করে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার সাবসিডিয়ারি কোম্পানি কর্ণফুলী পাওয়ার ও বারাকা শিকলবাহা পাওয়ারে বিনিয়োগের পাশাপাশি আংশিক দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পরিশোধ ও আইপিও প্রক্রিয়ার ব্যয় নির্বাহে খরচ করবে।
২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) সম্মিলিতভাবে ২৩ টাকা, আর এককভাবে ২০ টাকা ৯৮ পয়সা। একই সময়ে কোম্পানিটির সম্মিলিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ৩৭ পয়সা, এককভাবে যা ১ টাকা ৮৪ পয়সা।শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বারাকা পাওয়ার লিমিটেডের একটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। ২০০৭ সালে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে ৫১ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মধ্য দিয়ে যাত্রা হয় বারাকা পাওয়ারের।
এরপর ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) পক্ষ থেকে চট্টগ্রামে ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ফার্নেস অয়েল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি পায়।
এ দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবসায়িক সাফল্যের ধারাবাহিকতায় বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার দুটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠন করে। এর একটি কর্ণফুলী পাওয়ার লিমিটেড এবং অন্যটি হলো বারাকা শিকলবাহা পাওয়ার লিমিটেড। সাবসিডিয়ারি দুটির ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার।
বিশ্বব্যাংক প্রথম প্রাইভেট খাতের পাওয়ার প্ল্যান্ট হিসেবে বারাকা পাওয়ারে বিনিয়োগ করেছে। কোম্পানিটিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইপিপিএফ প্রজেক্ট সেলের মাধ্যমে ২ কোটি ১৯ লাখ ৭৫ হাজার ডলার বিনিয়োগ করেছে বিশ্বব্যাংক।
কর্ণফুলী পাওয়ার ১১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ফার্নেস অয়েলভিত্তিক একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, যা ২০১৯ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। বারাকা শিকলবাহা পাওয়ার বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে ২০১৯ সালের মে মাসে। এটির উৎপাদনক্ষমতা ১০৫ মেগাওয়াট ও এর জ্বালানি এইচএফও।