ঝিনাইদহে করোনা ও উপসর্গে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন মানুষ

0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ॥ একের পর এক মৃত্যুর বিভিষিকাময় খবরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ঝিনাইদহের মানুষ। ঘরে ঘরে অসুস্থ মানুষের ভিড় বাড়ছে। গ্রাম শহর সর্বত্রই ভুগছে মৌসুমি ঠা-া কাঁশি ও জ্বর নিয়ে। সামান্যতেই মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ছুটছেন চিকিৎসকের কাছে। ফলে সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি ভিড় বাড়ছে প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে। করোনার লক্ষণ নিয়ে অনেকের মৃত্যু হলেও তাদের কোভিড পরীক্ষার সুযোগ হচ্ছে না। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা নেই। নেই পর্যাপ্ত হাই ফ্লো অক্সিজেন ব্যবস্থা। এমন কথা চিন্তা করে অনেকেই কোভিড রোগী নিয়ে আতঙ্কে দিন পার করছেন। এদিকে ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জারসহ নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিদিন শুধুই মৃত্যুর সংবাদ ভেসে আসছে। কেউ কোভিডে আবার কেউ হৃদরোগে মারা যাচ্ছেন। কারো কারো মধ্যে থাকছে করোনার উপসর্গ। এমন প্রতিদিন স্বজন হারানোর বেদনায় অশ্রুসিক্ত হচ্ছে মানুষ। নিকটজনের কাছ থেকে ফোন পেয়ে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। চারিদেক যেন এক অস্বস্তিকর পরিবেশ।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, শৈলকুপার বাগুটিয়া গ্রামে দুই সপ্তাহ আগে একই দিন স্বামী স্ত্রীর মৃত্যু হয়। একই উপজেলার ফুলহরি কাজিপাড়া গ্রামে জিহাদ হোসেন নামে এক কিশোর গত ২১ জুন মৃত্যুর পর তার মা করোনা উপসর্গ নিয়ে ২৪ জুন মারা যান। ১১ দিনের ব্যবধানে তারা নানা সৈয়দ মাহবুব হোসেন শুক্রবার মারা গেছেন। জিহাদের পিতা সৈয়দ কোরবান আলী হিরন করোনার লক্ষণ নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গ্রাম শহরে অনেকর পরিবার ধরেই করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। অনেকে ভয়ে পরীক্ষা করাতে যাচ্ছেন না এমন খবরও পাওয়া যাচ্ছে। হরিণাকুন্ডুর পায়রাডাঙ্গা গ্রামের সোহরাব হোসেন মন্ডল জানান, শনিবার সকালে গ্রামের এক নিকটাত্মীয়কে দাফন করা পর দুপুরে খবর আসে বৃদ্ধ নানা করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এখন সেখানে যাচ্ছি দাফন করতে। লকডউনের কারণে স্বজনরা মারা গেলেও করোনার ভয় ও সড়ক পথে যাতায়াতের কারণে অনেকই বিদায় বেলায় প্রিয় মানুষটির মুখ দেখতে পারছেন না।
ডা. নজরুল ইসলাম নামে এক চিকিৎসক জানান, বর্তমান এই মৌসুমে ইনফ্লয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রকোপ থাকে। সাধারণত গ্রামে গ্রামে এই রোগ দেখা দিচ্ছে। তারা সুস্থও হচ্ছেন। আবার অনেক বয়স্ক মানুষের হৃদরোগসহ নানা সমস্যা আছেন। মৃত্যুবরণ করলেই উপসর্গ থাকায় অনেকেই ঢালাওভাবে করোনা ভাইরাসের কথা উল্লেখ করছেন। এসব কারণে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় ঝিনাইদহে করোনায় মারা গেছেন ৩ জন। এই নিয়ে জেলায় করোনা শুরুর পর থেকে একশ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ জন। ঝিনাইদহ করোনা ইউনিটে ভর্তি আছেন ৫৭ জন। ঝিনাইদহ ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ পর্যন্ত ১১১ জনের লাশ দাফন করেছে। এর মধ্যে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণকারীরাও আছেন।